মুক্তির খবরে আপ্লুত তারিকুলের পরিবার

প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মধুখালী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর থার্ড অফিসার ফরিদপুরের তারিকুল ইসলামের গ্রামের বাড়িতে আনন্দের জোয়ার বইছে। গতকাল দুপুরে তারিকুলের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ছকড়িকান্দি গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল সবার মুখে হাসি। বাড়িতে এসেছেন প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজনও। বাড়ির ভিতরে দেখা গেল তারিকুলের বাবা দেলোয়ার হোসেন বাড়িতে নেই। মা হাসিনা বেগম পাশের বাড়িতে গেছেন বেড়াতে। কিছু সময় পর ফিরলেন দেলোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী। ঘরে ঢুকতেই মুখে হাসি। একদিন আগেও তাদের মুখ ছিল মলিন। ছেলের মুক্তির খবরে মুখে ফুটেছে হাসি। তারিকুলের বাবা দেলোয়ার হোসেন জানালেন, গত রোববার ভোর ৪টার দিকে তার ছেলে তারিকুল তাকে ফোনে জানিয়েছে ‘বাবা আমি এখন মুক্ত’। সোমালিয়া থেকে জাহাজে দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। এরপর সকালে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ছেলে ফিরে আসছে এর চেয়ে খুশি আর কী হতে পারে। সরকার ও দেশবাসীর প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। জাহাজ কোম্পানিগুলোর নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হোক। তা না হলে আমার মতো হাজারো বাবার এমন সময় পার করতে হবে। আমি চাই না আমার মতো আর কেউ এমন কষ্ট পাক।’ আন্তর্জাতিকভাবে সোমালিয়ান দস্যুদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের এ পথ থেকে ফেরাতে আন্তর্জাতিকভাবে বিষয়টি দেখা উচিত। ব্যবসা বাণিজ্যতেও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে বিভিন্ন দেশকে। তারিকুলের মা হাসিনা বেগম জানালেন, ‘ছেলে মুক্তি পেয়েছে খবর পেয়ে জীবন ফিরে পেলাম। ছেলেকে ফিরে পেতে মসজিদে মিলাদ ও মানত করেছিলাম। গত এক মাস আমরা অনেক কষ্ট পেয়েছি। খেতে পারিনি, ঘুমাতে পারিনি। কীভাবে যে দিনগুলো কেটেছে, আল্লাহ আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দিয়েছে। আমার বুকের মানিককে আমি ফিরে পেয়েছি। মনটা একটু ভালো লাগছে। তবে ছেলে কাছে যেদিন আসবে সেদিন আমার আনন্দের সীমা থাকবে না। তিনি বলেন, ছেলের মুক্তির খবরে সকাল থেকেই প্রতিবেশীরা, আত্মীয়স্বজন সবাই ফোন করে জানাচ্ছে। ছেলে ভোররাতে তার আব্বার মোবাইলে যখন ফোন দিছে তার সাথে কথা শেষে যখন আমার কাছে মোবাইল দেয়, ওপাশ থেকে ছেলে যখন বলে আম্মা আমি মুক্তি পেয়েছি, একথা শুনেই আমার কলিজাটা ঠান্ডা হয়ে গেছে। অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী মো. দেলোয়ার হোসেনের দুই ছেলে এক মেয়ের মধ্যে সবার ছোট মো. তারিকুল ইসলাম। ছকড়ীকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পাস করে চলে যান ঢাকায়।