ঈদের দিন সন্ধ্যায় নানা বাড়ি যাওয়ার সময় রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে এক কিশোরীকে তিন দিন আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে কয়েকজন তরুণ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরীর বোন নড়িয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ৪ তরুণকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেছে নড়িয়া থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, দুদুল সরদার, তুষার মাঝি, শাকিব ও নাহিদ।
গ্রেপ্তারকৃতদের বয়স ২০ থেকে ২১ বছর। ভুক্তভোগীর পরিবার ও নড়িয়া থানা সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ডিঙ্গামানিক এলাকার বাসিন্দা ভুক্তভোগী ওই কিশোরী স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ালেখা করে। তার বাবা-মা না থাকায় বোনদের সঙ্গে থাকে। গত বৃহস্পতিবার ঈদের দিন সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে নানার বাড়িতে যাওয়ার পথে তাকে একই উপজেলার চন্ডিপুর ভিআইপি মোড় এলাকা থেকে দুদুল সরদার ও তুষার মাঝি নামে দুই তরুণ তাকে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ওই কিশোরীর। পরে তাকে সুরেশ্বর দরবার শরিফের ভক্তদের থাকার একটি টিনের ঘরে নিয়ে আটকে রেখে গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার পালাক্রমে ধর্ষণ করে দুদুল সরদার ও তুষার মাঝিসহ আরো তিন তরুণ। এরপর গত শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাকে একটি অটোরিকশায় উঠিয়ে দেয় ধর্ষণকারীরা। বাড়ি ফিরে ভুক্তভোগী কিশোরী তার বোনদের কাছে বিষয়টি খুলে বললে তারা তাকে নড়িয়া থানা পুলিশের কাছে নিয়ে যায়। নড়িয়া থানা পুলিশ শনিবার রাতে ওই কিশোরীকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। গেত রাববার দুপুরে সদর হাসপাতালের এক নারী চিকিৎসক ওই কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরীর বড় বোন বাদী হয়ে নড়িয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন। নড়িয়া থানা পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে। শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই কিশোরী বলেন, ঈদের দিন আমার নানা বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার সময় দুদুল ও তুষার মাঝি আমাকে মুখ চেপে অটোরিকশায় তুলে নিয়ে সুরেশ্বর দরবার শরিফের একটি টিনের ঘরে নিয়ে আটকে রেখে জোর করে আমাকে ধর্ষণ করে। শনিবার সকালে আরো তিনজন এসে আমাকে জোরপূর্বক আবারও ধর্ষণ করে। বিষয়টি আমি কাউকে জানালে তারা আমাকে পুড়িয়ে মেরে ফেলার ভয় দেখায়। এরপর আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে তারা আমাকে একটি অটোরিকশায় উঠিয়ে দেয়। আমি বাড়িতে গিয়ে আমার বোনকে সব ঘটনা খুলে বলেছি। আমি ওদের বিচার চাই। শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, পুলিশ ও ওই কিশোরীর স্বজনরা তাকে হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। ধর্ষণের বিষয়টি নিরীক্ষা করার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পরে বিস্তারিত বলতে পারব। নড়িয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পালাক্রমে ধর্ষণের শিকার হয়েছে এমন অভিযোগে থানায় একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আমরা চারজনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছি। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।