বগুড়ায় ঐতিহ্যবাহী মোরগ লড়াই
প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
বগুড়ায় সাতদিন ব্যাপী বৈশাখী মেলায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যেবাহী মোরগ লড়াই অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বুধবার বিকেলে বগুড়া থিয়েটারের উদ্যোগে শহরের পৌর পার্ক চত্বরে এ খেলা উপভোগ করেন কয়েকশ দর্শনার্থী। বিলুপ্তপ্রায় এ সংস্কৃতির আয়োজন দেখে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। এবারে লড়াইয়ে বগুড়া শহরের শিববাটি এলাকার আছিল ক্লাব ঘরের কালা মানিক, লাল মানিক, রকি ও সম্রাট নামের চারটি মোরগ অংশ নেয়। এ ক্লাবটিতে ভারতীয় জাতের ৩০টি লড়াকু মোরগ রয়েছে। নতুন প্রজন্মের কাছে গ্রামীণ খেলাকে নতুন করে তুলে ধরতে লাঠিখেলা, মোরগ লড়াই, পাতা আনা, সাপ-বেজির খেলা, হা-ডু-ডুর আয়োজন করা হয়। ৪৩ বছর ধরে বগুড়া থিয়েটারের আয়োজনে এ মেলায় ঐতিহ্যবাহী এসব খেলাধুলাকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। লড়াকু এই মোরগগুলো দেড় মাস বয়স থেকে শুরু করে ৪ বছর পর্যন্ত লড়াইয়ে অংশ নিতে পারে। ছয়মাস বয়সে ডাক শুরুর বয়স থেকে নিজেরাই প্রাকৃতিকভাবে লড়াই করতে শেখে। তবে প্রতিযোগিতার একমাস আগে থেকে তাদের বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আছিল ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা আমিরুল ইসলাম বলেন, একজন কুস্তিগিরের মতোই লড়াকু এসব মোরগের যত্ন নিতে হয়। খাবার হিসেবে কাজু বাদাম, কিসমিচ, সিদ্ধ ডিম, ফলের রস, সিং মাছ ও গরুর মাংস খাওয়ানো হয়। এ মোরগগুলোর দাম জাত ও শারিরীক অবস্থাভেদে আট হাজার থেকে ১ লাখ পর্যন্ত হয়ে থাকে। তিনি আরো বলেন, মোরগগুলো পোষা। আমার যেমন পেশা তেমনি শখও বটে? গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যে ধরে রাখার পাশাপাশি মানুষকে আনন্দ দিতে বেশ ভালো লাগে। দশম শ্রেণির স্কুল শিক্ষার্থী তাসমি হাসান মোরগ লড়াই দেখেছে বেশ মনোযোগ সহকারে। সে বলে, বৈশাখি মেলায় পুরোনো দিনের নানা খেলাধুলার আয়োজন থাকে, তা দেখতে বেশ মজা লাগে। বগুড়া থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক তৌফিক হাসান ময়না জানান, বৈশাখী মেলায় নতুন প্রজন্মের সামনে বিলুপ্তপ্রায় খেলাগুলো প্রদর্শিত হচ্ছে। নিজেদের হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতি উদ্ধার ও লালনে যেন মনোযোগী হয়ে ওঠে নতুন প্রজন্ম। বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য বহনকারী এসব খেলা হারিয়ে ফেলতে বসেছি আমরা। মূলত এ ভাবনা থেকেই গ্রামীণ ক্রীড়া উৎসবের আয়োজন। এটি প্রতি বছরই হয়ে থাকে।