মাধবপুরে বিরল প্রজাতির লজ্জাবতী বানর উদ্ধার
প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
হবিগঞ্জের মাধবপুরে একটি বিরল প্রজাতির লজ্জাবতী বানর (স্লো লরিস) উদ্ধার করছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘পাখিপ্রেমিক সোসাইটি’র সদস্যরা। গত বুধবার বিকালে উপজেলা চৌমুহনী ইউপির সীমান্তবর্তী কমলপুর গ্রাম থেকে বানরটি উদ্ধার করা হয়। হবিগঞ্জের বিভাগীয় কর্মকর্তা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী বলেন, কিছুদিন আগেও পাখিপ্রেমিক সোসাইটির সদস্যরা সংগঠনের একটি লজ্জাবতী বানর উদ্ধার করেছিল। বুধবার আরও একটি বানর উদ্ধার করেছে তারা। আমরা তাদের সহযোগিতা নিয়ে গতকাল সকালে স্থানীয় সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের গহিন বনে বানরটিকে অবমুক্ত করেছি। অবমুক্ত করার আগে বানরটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পাখিপ্রেমিক সোসাইটির সদস্য কায়েম মিয়া বলেন, অত্যন্ত সাবধানতা ও ঝুঁকি নিয়ে প্রাণীটিকে আমরা নিরাপদে খাঁচা বন্দি করি। পরে বন বিভাগের লোকজনকে খবর দেই। বানরটিকে ঈগল এবং কাক আক্রমণ করেছিল। সেখান থেকে আমরা এটিকে উদ্ধার করি। এদিকে, বন অধিদফতরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কমকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, লজ্জাবতী বানর বাংলা লজ্জাবতী বানর নামেও পরিচিত। মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান, রেমা কালেঙ্গা বনবিটসহ সিলেট ও চট্টগ্রামের ঘন গহীন বনে মূলত এদের বাস। নিশাচর এই প্রাণীটি গাছের উঁচু ডালে উল্টো হয়ে ঝুলে থাকে ও খুব ধীরে চলাচল করে। বানরের অন্য প্রজাতির মতো যত্রতত্র ঘোরাঘুরি না করে সব সময় নিজেকে আড়াল রাখতে পছন্দ করে। মূলত গাছের কচিপাতা, আঠা, ফলমূল, ছোট পোকামাকড়, পাখির ডিম খেয়ে থাকে। তবে মজার বিষয় হচ্ছে খাওয়ার জন্য এরা হাত ব্যবহার না করে সরাসরি মুখ লাগিয়ে খায়। বছরে একবার মাত্র একটি বাচ্চা দেয় এই প্রাণীটি। তিনি বলেন, দেশের বনাঞ্চলে ঠিক কতটি লজ্জাবতী বানর রয়েছে তার সঠিক কোনো হিসাব নেই। তবে বন উজাড় এবং খাদ্য ও আবাসস্থল সংকটের কারণে সুন্দর এই প্রাণীটি হারিয়ে যেতে বসেছে। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) লজ্জাবতী বানরকে ‘সংকটাপন্ন’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। বন্যপ্রাণী আইন-১৯৭৪ ও বন্যপ্রাণী আইন-২০১২-এর তফসিল-১ অনুযায়ী এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত। তাই এই প্রাণীটি হত্যা, শিকার বা এর যে কোনো ক্ষতি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।