গরমে হাঁসফাঁস। তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে ঈশ্বরদী। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই রোদ আর গরমে। প্রখর রোদে পথ-ঘাট সব কিছুই উত্তপ্ত। সব থেকে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন খেটে খাওয়া শ্রমিকরা। গতকাল শুক্রবার বিকাল ৩টায় ঈশ্বরদীতে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি মৌসুমে উপজেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। পাবনার ঈশ্বরদীতে চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। গত বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বৃহস্পতিবার ঈশ্বরদীতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঈশ্বরদী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, গতকাল বিকাল ৩টায় ঈশ্বরদীতে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে দেশে তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। এমন আবহাওয়ায় রেলপথেও বাধতে পারে বিপত্তি। তাই দুর্ঘটনা রোধে যাত্রীবাহী আন্তঃনগর ট্রেনসহ সব ধরনের ট্রেনকে গতি কমিয়ে চালাতে বলেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। তবে রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, এটার জন্য একটা স্ট্যান্ডিং অর্ডার রয়েছে। তবে স্থান, কাল, পাত্রের উপর নির্ভর করে নির্দেশনা কার্যকর হবে। অর্থাৎ কোনো সেকশনের পরিবেশ, ট্র্যাকের কন্ডিশন বিবেচনা করে এটি কার্যকর হয়। আমাদের কর্মকর্তারা দেখেন ট্র্যাকের টেম্পারেচার কেমন, পরিবেশ কেমন, তারপর নির্দেশনা দেন।
তিনি আরও বলেন, এটা ৩০ ডিগ্রি বা ৪০ ডিগ্রির কোনো বিষয় না। কারণ যেখানে নতুন ট্র্যাক রয়েছে সেখানে ৬০ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা নিতে পারে। আবার পুরোনো ট্র্যাকগুলোতে এত বেশি তাপমাত্রা নিতে পারে না। অর্থাৎ স্থানীয় কন্ডিশনের উপর ভিত্তি করে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। উপজেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, গত সপ্তাহ ধরে ঈশ্বরদীতে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে চলেছে। ১৩ এপ্রিল ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি, ১৪ এপ্রিল ৩৯ ডিগ্রি, ১৫ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি ও ১৬ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি, বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বৃহস্পতিবার ঈশ্বরদীতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। তবে বুধবার থেকে শুরু হয়েছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এপ্রিল মাসজুড়েই গরমের তীব্রতা রয়েছে। তবে এপ্রিলের ১২ তারিখ থেকে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠানামা করছে ও তা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। গত ১২ এপ্রিল ঈশ্বরদীর তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরদিন ১৩ এপ্রিল তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি, ১৪ এপ্রিল ৩৯ ডিগ্রি, ১৫ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি, ১৬ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি এবং গত বুধবার ১৭ এপ্রিল তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা তীব্র তাপপ্রবাহ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। টানা তাপপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ। রিকশা ও অটোচালকদের সড়কে চলাচল কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।