সোনাগাজী ডাঙি খালের মাটি লুটের অভিযোগ
প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
জাবেদ হোসাইন মামুন, সোনাগাজী (ফেনী)
লাল নিশানা দিয়ে ফেনী জেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের সোনাগাজী ডাঙি খালের মাটি লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকরা ডিসি, ইউএনও, পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশীলী এবং ৯৯৯ নাইনে ফোন দিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে মাটিগুলো রক্ষা করলেও শুক্রবার রাতে আর রক্ষা করতে পারেননি। গত শুক্রবার রাতভর স্কাভেটর দিয়ে কেটে বেশ কয়েকটি পিকআপযোগে মাটিগুলো লুটে নিয়েছে। রাতেই লুট হচ্ছে এসব মাটি। ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ সোনাগাজী ডাঙি খালের পূর্বাংশ স্কাভেটর দিয়ে খনন করে খালের পাড়েই খননকৃত মাটিগুলো স্তূপ আকারে রাখায় হয়। চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার নজরুল ইসলাম রিপনের নেতৃত্বে একটি ভূমি দস্যু সিন্ডিকেট খালের মাঝখানে বাঁধ তৈরি করে স্কাভেটর দিয়ে খালের পাড়ের মাটিগুলো লুটে নেয়। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে মাটিগুলো লুটের জন্য একদল সন্ত্রাসী নিয়ে মহড়া দেওয়া হয়। এতে গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। দু’দফা পুলিশের জাতীয় জরুরিসেবা ৯৯৯ এ ফোন দিলে দু’দফা সোনাগাজী মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেলে মাটি দস্যু ও সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। সন্ত্রাসীদের ভয়ে উদ্বিগ্ন গ্রামবাসী নিরপায় হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ফেনীর জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসানকেও বিষয়টি মুঠোফোনে অবগত করেন। প্রশাসনের তৎপরতায় বৃহস্পতিবার রাতে লুট থেকে রক্ষা পেলেও শুক্রবার রাতে আর রক্ষা করা যায়নি। সোনাগাজী ডাঙি খালের উপকণ্ঠের চরচান্দিয়া গ্রামের বাসিন্দা নূরনবী, সাইদুল হক, নূরুল আমিন, গবী, মাঈন উদ্দিন, আলমগীর হোসেন, শাহাব উদ্দিন, শাহজাহান, ফুলওয়ারা বেগম, ফাতেমা বেগম, সুইটি আক্তার, বিউটি আক্তার ও নূরুল ইসলাম গং এসব অভিযোগ করেছেন। তারা আরও বলেন, দুই বছর আগেও খালটি খনন করা হয়েছিল। খালটি খননের ফলে বিপ্লু পরিমাণ গাছগাছালির ক্ষতি হয়েছে। এরপরও খালের পাড়ে রাখা মাটিগুলো লুটে অন্যত্র বিক্রি করে দিলে জমির মালিকরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। তদুপরি তাদের ফসলি জমি, পুকুর পাড় ও বসতবাড়ির ভিটিগুলো ভেঙে খালে পড়ে যাবে। প্রশাসনসহ সর্বমহলে অভিযোগ করার পরও মাটি দস্যুদের থাবা থেকে মাটিগুলো রক্ষা করতে না পেরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এ ব্যপারে চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষেেদর মেম্বার নজরুল ইসলাম রিপন বলেন, আমি মাটি লুটের সঙ্গে জড়িত নয়। যে বা যারা অভিযোগ করেছেন তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। আমি কোনো মাটি কারবারের সঙ্গে জড়িত নেই।
সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, বক্তিগতভাবে কেউ খালের মাটি লুটের সুযোগ নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ড খালের মাটি নিলামে দিতে পারবে। এছাড়া সরকারের কোনো উন্নয়ন কাজে ব্যবহার করতে পারেবেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসার (এস.ও) মো. রকি বলেন, খননকৃত মাটি অন্যত্র বিক্রির সুযোগ নেই। যদি মাটি বিক্রি করতে হয় পাউবো কর্তৃপক্ষ বিধি মোতাবেক নিলামে বিক্রি করতে পারবে। একটি সিন্ডিকেটের মাটি লুটের বিষয়টি গ্রামবাসীর কাছ থেকে শুনেছি। আমরা বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেব। যারা মাটি লুটের সঙ্গে জড়িত তারা প্রভাবশালী হওয়ায় গ্রামবাসী জিম্মি হয়ে পড়েছে।