বিপাকে কৃষক ও সাধারণ মানুষ
কালীগঞ্জে ক্রমেই নামছে পানির স্তর
প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
হুমায়ুন কবির, কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলায় চলতি শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর নেমে যাওয়ায় শত শত নলকূপে পানি উঠছে না। এ ছাড়া হাজার হাজার টিউবওয়েলে পানি অনেক কম উঠছে। আবার অধিকাংশ বন্ধও হয়ে গেছে। পানির স্তর নেমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন উপজেলার সাধারণ মানুষ। খাবার হোটেল ব্যবসায়িরাও পড়েছে পানির অভাবে মহাসংকটে। ইরি ধানের মাঠে সেচকাজে মাত্রাতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করায় এমনটি হয়েছে। চলতি শুষ্ক মৌসুমে কালীগঞ্জ উপজেলার বেশিরভাগ বিল-ঝিল, জলাশয় ও পুকুর-নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। বিশেষ করে জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ১০ নদী ও ২টি নদের প্রায় ৯০ শতাংশ পানি শুকিয়ে গেছে। ফলে নদীর মাঝে ও পাশে ধান চাষ করছে এলাকার কৃষকরা। টিউবওয়েল স্থাপন করা শ্রমিকরা বলছেন, সাধারণত ২৫ থেকে ৩০ ফুট মাটির নিচে পানির স্তর পাওয়া যায়। কিন্তু এখন নলকূপ স্থাপন করতে গিয়ে ৪০ থেকে ৫০ ফুট নিচেও পানির লেয়ার মিলছে না। যে কারণে পানির লেয়ার পাওয়া যাচ্ছে না। নতুন করে এ উপজেলার কোনো মানুষ বাসা বাড়িতে টিউওয়েল স্থাপন করছেন না। এদিকে কৃষকের ধান খেতে সেচের কাজে ব্যবহৃত স্যালোমেশিনেও পানি উঠছে না। অনেক স্যালোমেশিন পানি উঠতে উঠতে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পানি নিয়ে কাজ করা জেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বিএডিসি এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, দীর্ঘ দিন বৃষ্টি না হওয়ায় পানির প্রাকৃতিক উৎসগুলো ক্রমেই শুকিয়ে যাচ্ছে। অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে ইরিধানের জমিতে সেচ দেওয়া এবং গরমের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ধীরে ধীরে নলকূপগুলোর এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে। যে কারণে গৃহস্থালীর কাজে যেমন অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে, তেমনি গৃহপালিত পশু-পাখির বিশুদ্ধ পানির উৎসের সংকট দেখা দিয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যক্তি উদ্যোগে যারা বাড়িতে নলকূপ বসিয়েছেন, তারা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ নিলে শুষ্ক মৌসুমে পানির এমন সংকট হত না। কালীগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে অধিকাংশ বাসাবাড়ি, হোটেল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কৃষকের ধানখেতসহ বিভিন্ন স্থানের নলকূপে পানি উঠা বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক টিউবওয়েল পানি না ওঠায় তা প্রায় অকেজো হয়ে পড়েছে। কালীগঞ্জ শহরের টিউবয়েল ব্যবসায়ী হাছান মিয়া জানান, তাদের শ্রমিকরা গ্রামঞ্চলে নলকূপ বসিয়ে থাকেন। সাধারণত ২০ থেকে ২৪ ফুট মাটির নিচে পানির লেয়ার বা স্তর পাওয়া যায়।