ঢাকা ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আবাসিক এলাকায় উচ্চ শব্দ

বেআইনিভাবে করা হয়েছে তাঁতের কারখানা

বলছে পরিবেশ অধিপ্তর
বেআইনিভাবে করা হয়েছে তাঁতের কারখানা

পাবনার সাঁথিয়া পৌরসভাধীন ৬নং ওয়ার্ডে পিপুলিয়া গ্রামে তিনতলা আবাসিক ভবনের সীমানা ঘেঁষে নিয়মবহির্ভূতভাবে আবাসিক এলাকায় উচ্চ শব্দ বিশিষ্ট চায়না পাওয়ারলোম তাঁতের কারখানা করে বসবাসের বিঘ্ন সৃষ্টি, হুমকি-ধামকিসহ নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ওই আবাসিক ভবনের মালিক প্রবাসী দুলাল হোসেন কারখানার মালিক আলামিন হোসেনের বিরুদ্ধে পৌর মেয়র, পরিবেশ অধিদপ্তর বরাবর অভিযোগসহ পাবনা আদালতে পিটিশন দায়ের করেছেন। আবাসিক এলাকায় উচ্চ শব্দ বিশিষ্ট তাঁতের কারখানা বেআইনীভাবে করা হয়েছে বলছে পরিবেশ অধিপ্তর। অভিযোগে জানা গেছে, সাঁথিয়া পৌরসভার সন্নিকটে পিপুলিয়া গ্রামে আক্কাজ আলীর ছেলে আলামিন হোসেন বিধিবহির্ভূতভাবে উচ্চ শব্দ সৃষ্টিকারী চায়না পাওয়ারলোম তাতের ফ্যাক্টরি স্থাপন করেন। যার শব্দের কারনে পার্শ্ববর্তী ভবনে বসবাস করা কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে। ভুক্তভোগী প্রবাসী ৩-৪ বছর আগে থেকে এই ভবনে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছিলেন।

তিনি আরো অভিযোগ করেন, আলামিন হোসেনের একই এলাকায় আরো ২/৩টি জায়গা থাকা সত্ত্বেও সম্পূর্ণ বিদ্বেষপূর্বকভাবে বসত বাড়ির গা ঘেঁষে উচ্চ শব্দের তাঁতের ফ্যাক্টরী স্থাপন করেন। স্থানীয়ভাবে ফ্যাক্টরি স্থাপনের বিষয় নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের সাথে কথা বললে তারা বিষয়টি আলামিনকে অবহিত করলেও এতে সে কোনো কর্ণপাত করেনি। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী দুলাল হোসেন বাধ্য হয়ে ২০২৩ সালের আগস্টের ১৩ তারিখে পৌর মেয়র বরাবর একটি অভিযোগ করেন। সে অভিযোগ এর প্রেক্ষিতে কিছু দিন কার্যক্রম বন্ধ রাখলেও স্থানীয় প্রভাবশালী লোকজন এর প্রভাব খাটিয়ে পুনরায় কাজ শুরু করা হয়। এদিকে ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে তারা। এমতাবস্থায় ভুক্তভোগী প্রবাসী দুলাল হোসেন এর পক্ষে চলতি বছরের গত ৫ মার্চ আব্দুল মুন্নাফ বাদী হয়ে, পাবনা আদালতে পিটিশন মামলা (নম্বর ১৭১/২০২৪) দায়ের করে, যা বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। ওই ফ্যাক্টরীর আশপাশের বাসিন্দা দ্বীন আমিন ও টুম্পাসহ অনেকেই জানান ফ্যাক্টরির পাশেই আমাদের বসত ঘর। বাসায় আমরা কিছু ছেলে মেয়েদের পড়াই; কিন্তু ওই মেশিনের শব্দে পড়ানোর চরম সমস্যা। রাতে ঘুমাতেও পারি না চায়না মেশিনের বিকট শব্দে। এতে নিজের ছেলে মেয়েদেরও পড়ালেখায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। চায়না পাওয়ারলোম ফ্যাক্টরীর মালিক আলামিন জানান, আমি সব নিয়ম মেনে এখানে ফ্যাক্টরী করেছি। পৌরসভাসহ সব কাগজপত্র আমাদের কাছে আছে। এ বিষয়ে সাঁথিয়া পৌর মেয়র মাহবুবুল আলম বাচ্চু বলেন, বিভিন্ন প্রকার শর্তপূরণ সাপেক্ষে তাকে এনওসি দেয়া হয়েছে। এ দিকে আবাসিক ভবনের মালিক প্রবাসী আলহাজ দুলাল হোসেন গত ১৭ এপ্রিল পরিবেশ অধিদপ্তর পাবনা কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের ভিত্তিতে গেল বৃহস্পতিবার পরিবেশ অধিদপ্তরের পাবনা কার্যালয়ের পরিদর্শক নজরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে যান এবং আশ-পাশের স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা পান। তিনি বলেন, নতুন এ ধরনের কারখানার অনুমতি দেয়া হয়নি। তদন্ত রিপোর্ট অফিসে জমা দিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাজমূল হোসেন বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই এলাকায় পরিদর্শনে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, আবাসিক এলাকায় কারখানার অনুমতি নেই। তাছাড়া নতুন কারখানা করার ছাড়পত্র দেয়া বর্তমানে বন্ধ আছে। আমরা কারখানার মালিকের কাছে জবাব চেয়ে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ওই নোটিশের জবাব এলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে সাঁথিয়া পৌর মেয়র মাহবুবুল আলম বাচ্চু বলেন, বিভিন্ন প্রকার শর্ত পূরণসাপেক্ষে তাকে এনওসি দেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত