প্রায় ১৪০ ফিট নিচে দড়ি বেঁধে পাঠানো হচ্ছে প্লাস্টিকের বোতল। এরপর তা টেনে তুলে তা জমা করা হচ্ছে একটি পাত্রে। মাটির নিচ থেকে শুধু পানি আসার কথা থাকলেও এর পরিবর্তে আসছে তরল এক ধরনের দাহ্য পদার্থ। আর এই দৃশ্য দেখতেই দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে উৎসুক জনতা। গত ১৭ এপ্রিল বিকাল থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার ভোলামোড় এলাকায় আব্দুল আওয়ালের বাড়ির পানি তোলার পাম্পে এমন ঘটনা ঘটেছে। পানির সঙ্গে আসা তরল পদার্থের গন্ধ অনেকটাই ডিজেলের মতো। এমনকি নিচ থেকে তোলা এই পানিতে কাগজ ডুবিয়ে গ্যাসলাইট বা দেয়াসলাই ধরলেই জ্বলছে আগুন। এতে পানির সঙ্গে আসা তরল পদার্থকে ডিজেল বলেই মনে করছেন মর্টার মালিক ও তার পরিবার। দীর্ঘ দেড় মাস মর্টার নষ্ট হয়ে পড়ে থাকার পর তা মেরামত করতে গিয়েই এমন তরল পদার্থ বের হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মাটির নিচ থেকে পানির সঙ্গে ডিজেলের মতো এমন গন্ধ ও দাহ্য পদার্থ বের হওয়ার খবর পেয়ে দেখতে ছুটে আসছে অনেকেই।
এমনকি নিজেরা তা পরখ করতে হাত ডুবিয়ে নাকে দিয়ে গন্ধ নিয়ে নিশ্চিত হচ্ছেন তা ডিজেল কি না। এছাড়াও মর্টারের পাইপ দিয়ে উঠে আসা তরলে কাগজ চুবিয়ে আগুন ধরানোর চেষ্টা করেছেন তারা। এ সময় আগুন ধরায় তাতে আরও আগ্রহ বাড়ছে। স্থানীয়দের দাবি, শুধুমাত্র পানি হলে আগুন ধরত না। এ নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা ও খতিয়ে দেখার দাবি তাদের। বাড়ির মালিক আব্দুল আওয়াল জানান, তিন বছর আগে পানি খাওয়ার জন্য মর্টারটি বসানো হয়, এটি উপজেলা পরিষদ থেকেই বসানো হয়েছিল। গত প্রায় দেড় মাস থেকে মর্টারটি দিয়ে পানি না ওঠায় গত বুধবার সকালে মিস্ত্রি এনে পানি না ওঠার কারণ খোঁজা হচ্ছিল। মিস্ত্রি কাজ করার সময় মর্টারের পাইপ দিয়ে মাটির নিচ থেকে পানির পরিবর্তে তেলের মতো উঠে আসে। পরে দেখে মনে হয়েছে ডিজেলের মতো। তিনি আরও বলেন, গত তিন বছর ধরে আমরা পানির পাম্প থেকে পানি পান করেছি। এমনকি এখান থেকে তোলা পানি বাড়ির অন্যান্য কাজেও ব্যবহার করেছি।
হঠাৎ করে পানির পরিবর্তে তেলজাতীয় তরল পদার্থ বের হওয়ার বিষয়টি আমরা উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি, যাতে তারা এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা করেন। স্থানীয় যুবক সুমন আলী বলেন, ফেসবুকে ঘটনাটি দেখার পর এখানে এসেছিলাম। এ সময় মর্টারের পাইপ দিয়ে উঠে আসা তরলে আমি কাগজ চুবিয়ে আগুন ধরানোর চেষ্টা করি। এ সময় আগুন ধরে যায়। পানি হলে তো আগুন ধরত না। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খাঁন বলেন, বিষয়টি আমরাও বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছি।
এ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রসঙ্গত, গত তিন বছর আগে আব্দুল আওয়ালের বাড়ির পেছনে পানির পাম্পটি স্থাপন করে উপজেলা পরিষদ। এরপর থেকে খাবার পানি উত্তোলন করে তা পান করেছে আশপাশের কয়েকটি পরিবার।