মানিকগঞ্জের ঘিওরে বৃষ্টি না হওয়ায় ভূ-উপরিস্থ পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নেমে গেছে। ফলে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। তীব্র খরা, বৃষ্টিহীনতায় চাপা টিউবওয়েলে পর্যাপ্ত পানি না ওঠায় জনজীবনে হাঁসফাঁস তৈরি হয়েছে। উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে সদর ইউনিয়ন এবং বড়টিয়া ইউনিয়নে সুপেয় পানির সংকট বেশি বলে জানা গেছে। শুধু তাই নয় সবশেষ জরিপ অনুযায়ী পানিতে ২০২১ সালে আর্সেনিক ঝুঁকি নিরসন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার সিংজুরী, বানিয়াজুরী, বড়টিয়া, নালী, ঘিওর, বালিয়াখোড়া, পয়লা ইউনিয়নে ১৭ হাজার ৫শত টিউবওয়েলের পানি পরীক্ষা করে সাড়ে তিন হাজারেরও অধিক টিউবওয়েলে আর্সেনিক পায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের তথ্য অনুযায়ী বর্তমান সময়ে উপজেলায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ২৮’ ফুট পর্যন্ত নেমে গেছে। পারিবারিকভাবে বসানো হাজার হাজার নলকূপে পর্যাপ্ত পানি নেই। কিছু এলাকায় মানুষ ৫৫০-৬০০ ফুটেরও বেশি গভীর নলকূপ বসিয়ে নিজ নিজ পরিবারের পানির চাহিদা মেটাচ্ছেন। এমন অবস্থায় উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ তীব্র পানির সংকটের মুখে পড়েছে। তবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কর্মকর্তারা জানান, বৃষ্টি নামলে এ অবস্থার উন্নতি হতে পারে। উপজেলায় সর্বোচ্চ পার লিটারে ০.১৭২ মিলি গ্রাম আর্সেনিক এবং ১০.১ মিলি গ্রাম পার লিটারে আয়রন পাওয়া গেছে। যা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। এমন নানা সমস্যায় সুপেয় পানির সংকট দিনদিন প্রকট আকার ধারণ করছে। এ ছাড়াও ভূ-গর্ভস্থে অতিরিক্ত পাথরের উপস্থিতি থাকায় পানিতে মাত্রা অতিরিক্ত আয়রন দেখা দিচ্ছে। উপজেলায় সরকারিভাবে টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়েছে ৩ হাজার ২৩৬ টি এবং গভীরনলকূপ স্থাপন করা হয়েছে ৯৪৮টি। উপজেলার বড়টিয়ার গ্রামের আব্দুর রহমান জানান, প্রায় মাস খানেক ধরে বাড়ির টিউবওয়েলে পানি উঠছেনা। পাশের অন্যবাড়ি থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। সরকারিভাবে গভীর নলকূপের ব্যবস্থা করে দিলে উপকৃত হতাম। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের চরকোশুণ্ডা গ্রামের শহিদুর রহমান টিপু বলেন, ২০০ ফিটের টিউবওয়েল স্থাপন করেছি কিন্তু পানি পরীক্ষা করে আর্সেনিক ধরা পড়ে।
যার কারণে টিউবওয়েলের পানি খাবার হিসেবে ব্যবহার করতে পারি না। খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। উপসহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মো. জাকারিয়া কবির জানান, উপজেলায় সুপেয় পানির ব্যাপক সংকট রয়েছে। পানিতে অধিক পরিমাণে আর্সেনিক এবং আয়রন পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া বৃষ্টি না হওয়ায় ভূ উপরিস্থ পানি শুকিয়ে যাওয়ায় টিউবওয়েলেও পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যাচ্ছে না। তবে বৃষ্টি নামলে এ অবস্থার উন্নতি হতে পারে।