পশ্চিম সুন্দরবনের অভয়ারণ্যে মাছ ধরার হিড়ক পড়েছে। যে কারণে সুন্দরবনের নদী ও খাল মৎস্যজাত প্রাণী শূন্যের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রতিদিন ও রাতে শত শত নৌকা প্রবেশ করছে সুন্দর বনের অভয়ারণ্যে ঘোষিত এলাকা নোটাবেকী, পুষ্পকাটি, মান্দারবাড়িয়া, হলদেবুনিয়া, পাকড়াতলীর চর, ডিঙ্গিমারী, বালিঝাকি, আঙরাকোনাসহ নানা এলাকায়। বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে মাছ ধরতে যাচ্ছে, জেলেরা অথচ নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশের উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বনের ভেতরের ফাঁড়ি পুষ্পকাটি, লতাবেড়ী, দোবেকী, মান্দারবাড়ীয়া কর্মকর্তা কর্মচারীদের ম্যানেজ করে সাপ্তাহিক চুক্তিতে অসাধু জেলেরা মাছ ধরছে। এতে অল্প সময়ে অনেক মাছের আশায় তারা অভয়ারণ্যে মাছ ধরছে। প্রতি অমাবস্যা ও পূর্ণিমার গোনে ফাঁড়ির কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে চুক্তিতে মাছ ধরছে তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই সব বন ফাঁড়ির কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ম্যানেজ করে মাছ বা কাঁকড়া ধরছে। সুন্দরবনের বড় কর্মকর্তারা যখনই সুদরবনে প্রবেশ করছে তখনই ওইসব ফাঁড়ি কর্মকর্তারা মাছ বা কাঁকড়া ধরা নৌকাগুলোকে সংকেত দিয়ে ছোট খালে প্রবেশ করিয়ে রাখছে। কর্মকর্তারা চলে গেলে তারা আবারও মাছ ধরছে। এ ব্যাপারে কথা হয় গাবুরার জেলে আঃ হাকিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, অভয়ারণ্যে মাছ ধারর জন্য ফাঁড়ি কর্মকর্তাকে কিছু টাকা দিলে সহজে মাছ ধরা যায়। এ ব্যাপারে কথা হয় দাতনেখালীর জেলে রফিকুলের সাথে তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন বন অফিস থেকে পাশ নিয়ে অভ্যয়ারণে নোটাবেকী, পুষ্পকাটি অভয়ারণ্যে এলাকায় যাই এবং ওইসব ফাঁড়িগুলোকে ম্যানেজ করে মাছ ধরি।
কথা হয় টেংরাখালীর জেলে সাহাবাজ খোকনের সাথে তিনি বলেন, পর্যাপ্ত মাছ পেতে হলে অভয়ারণ্যে যেতে হয়, তাতে অনেক সময়ে পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যায়। বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তরা মাঝেমধ্যে অভিযান পরিচালনা করে নৌকা ও মাছসহ আটক করে আইননুগত ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও পরক্ষনে আবারও একই পেশায় ফিরে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে জেলেদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের যা দাম তাতে এই কাজ করা ছাড়া পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। কথা হয় নোটাবেকী বন কর্মকর্তা হারুন আর রশিদের সঙ্গে তিনি বলেন, অভয়ারণ্যে কাউকে মাছ ধরতে দেওয়া হয় না। কথা হয় পুষ্পকাটি বন কর্মকর্তা আব্দুস সালামের সঙ্গে তিনি বলেন সুন্দরবনের অভয়ারণ্যে মাছ বা কাঁকড়া ধরতে দেওয়া হয় না।
কথা হয় সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এম, কে, এম ইকবাল হোছাইন চৌধুরীর সঙ্গে তিনি বলেন, মাঝেমধ্যে অভিযান দিয়ে অবৈধ নৌকা বা জেলে পেলে, তাদের ধরে আইনে সোপার্দ করা হচ্ছে।