ঢাকা ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ভৈরবে বোরো ধানের বাম্পার ফলন

দাম নিয়ে হতাশা
ভৈরবে বোরো ধানের বাম্পার ফলন

বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে জমিতে সোনালি ধান রোপণ করেন গ্রামের মেহনতি কৃষকরা। ঘাম ঝড়ানো শ্রমের বিনিময়ে উৎপাদিত এসব ধানের ন্যায্য মূল্য পেয়ে আপনজন নিয়ে কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্যে থাকবেন- এমনটাই আশা তাদের। এর ব্যতিক্রম নয় জেলার ভৈরব উপজেলার কৃষকরা। চলতি বছরে হাওরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু বাজার দর নিয়ে শঙ্কায় কৃষকরা। তারা বলছেন, ফলন ভালো হলেও বাজারে দর কম থাকায় লোকসানের মুখে পড়বে তারা। স্থানীয় কৃষি অফিসের সূত্র মতে, ভৈরব উপজেলার জোয়ানশাহী হওরসহ বিস্তীর্ণ ফসলি জমি রয়েছে। এরমধ্যে সাদেকপুর ও শ্রীনগর ইউনিয়নের জোয়ানশাহী হাওর এবং আগানগরের ডিগচর অন্যতম। চলতি বছরে ভৈরবে ৬ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।আবাদকৃত জমির মধ্যে আগাম জাতের বিআর ২৮, ৮৮ ও বঙ্গবন্ধু ধান অন্যতম। তবে, ২৯ ধানের চাষাবাদ বেশি। স্থানীয় কৃষি অফিসের সহযোগিতায় এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এরই মধ্যে হাওরের আগাম জাতের ১০ ভাগ ফসলী জমির ধান কর্তন হয়েছে। কৃষকদের দাবি, ধান উৎপাদনে সেচ, শ্রমিকের মজুরি, সার ও কীটনাশকের দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষকের উৎপাদন খরচও বেড়ে গেছে। কিন্তু উৎপাদন খরচের তুলনায় বাজারে ধানের দর কম। ফলে লোকসান দিয়েই ধান বিক্রি করতে হচ্ছে তারা। ধানের মোকাম ঘুরে দেখা গেছে, মোটা বোরে ধান ৭৪০ টাকা থেকে সাড়ে ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে, এখনও বাজারে চিকন ধানের আমদানি শুরু হয়নি। সবমিলিয়ে মুখে হাসি নেই খেটে খাওয়া এসব মেহনতী মানুষের। অথচ, সরকার এবছর প্রতি কেজি ধান ৩২ টাকা নির্ধারণ করেছে। সে হিসেবে প্রতি মণ ধান ১২শ’ ৮০ টাকা দর পড়ে। ফলে ধানের ন্যয্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা। উপজেলার জোয়ানশাহী হাওরের কৃষক ছানু মিয়া বলেন, জমিতে ফলন ভালো হয়েছে। দিন-মাদান (আবহাওয়া) ভালো থাকলে আশা করি ফসল ঘরে তুলতে পারব। এছাড়া আবুল মিয়া নামে এক কৃষক বলেন, আমরা অনেক আউশ কইরা ধান করি। কিন্তু জমি চাষাবাদ, সেচ, শ্রমিকের মজুরি এবং সার ও কীটনাশক ব্যবহারে যেহারে উৎপাদন খরচ পড়ে। সে হিসেবে ন্যায্য দর পাই না। তারা মনে করেন, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। তাই, কৃষকরা যেন ধানের ন্যায্যমূল্য পায়, সেজন্য সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনবে সরকার- এমনটাই দাবি এ অঞ্চলের কৃষকদের। এদিকে হাওরের কৃষকদের একটি মাত্র ফসল রক্ষায় দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আগাম বন্যার হাত থেকে বাঁচাতে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সুইচগেটসহ কাঁচা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন, শ্রীনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হারুন অর রশীদ ভূইয়া। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম বলেন, এ বছর লক্ষ্যমাত্র অর্জিত হয়েছে। ফলে প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। কৃষি অফিসের মাঠকর্মীরা কৃষকদের সব সময় পরামর্শ ও সহযোগিতা দিতে আসছেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পুরোদমে কাটা কর্তন শুরু হবে। তিনি আরো বলেন, এরইমধ্যে আগাম জাতের ধান কর্তন প্রায় শেষের দিকে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সহজে ধান ঘরে তুলতে পারবেন। এছাড়া সরকার এ বছর প্রতি কেজি ধানের দাম ৩২ টাকা নির্ধারণ করেছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত