ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কালীগঞ্জে তাপপ্রবাহের মধ্যে স্কুলে চলছে প্রাইভেট বাণিজ্য

কালীগঞ্জে তাপপ্রবাহের মধ্যে স্কুলে চলছে প্রাইভেট বাণিজ্য

চলমান তাপপ্রবাহের কারণে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সব স্কুল ও কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ঝিনাইদহহের কালীগঞ্জ উপজেলার কোলাবাজার ইউনাইটেড হাইস্কুল বিদ্যালয় খোলা রেখে নতুন ভবনের দোতলায় শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের ন্যায় প্রাইভেট পড়াচ্ছেন ওই বিদ্যালয়ের অংকের শিক্ষক জীবন এবং ইংরেজির শিক্ষক মনিরুল ইসলাম। সরেজমিন বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের দোতালায় দুটি শ্রেণীকক্ষে এ দুই শিক্ষক পাঠদান কছেন। স্কুল বন্ধের মধ্যে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করোনার নিয়ম আছে কি না- জানতে চাইলে তারা জানান, কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত পাঠদান করানো হচ্ছে। অন্যদিকে পাঠ গ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, আমরা এখানে প্রাইভেট পড়ছি। গরমে স্কুল বন্ধ থাকলেও প্রাইভেট পড়ে নিজেদের পড়াটা এগিয়ে নিচ্ছি। গরমে আমাদের প্রাইভেট পড়তে আসতেও কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু কিছু করার নেই। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক তরুণ কান্তি জানান, আমার বিদ্যালয়ের ভবনে কেউ প্রাইভেট পড়াচ্ছেন কি না তা আমার জানা নেই। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়টির ভবন ব্যবহার করে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা রমরমা প্রাইভেট বাণিজ্য করে আসলেও পরিচালনা পরিষদের সভাপতি, প্রধান শিক্ষক কিংবা শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কেউই কখনো কোনো ব্যবস্থা নেননি। শুধু এই বিদ্যালয়টিই নয়; উপজেলার শহরাঞ্চলের সরকারি নলডাঙ্গা ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সলিমুন্নেসা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, মোবারক আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মোবারকগঞ্জ সুগার মিল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষক সরকারি নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে প্রচণ্ড তাপদাহ চলমান থাকা অবস্থায়ও চালিয়ে যাচ্ছেন প্রাইভেট বাণিজ্য। প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত শহরের বনানী পাড়া, ভূষণ মাঠ পুকুর পাড়, নিশ্চিন্তপুর শাসন পাড়া, আংশিক বলিদাপাড়া, কাঁঠাল বাগান, ফয়লা বোর্ড স্কুলপাড়া, কোলা রোড, ওয়াবদা রোড, আড়পাড়া, কলেজপাড়া, মহিলা কলেজ পাড়া নামক এলাকাগুলোতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা প্রাইভেট পড়াচ্ছেন।

এছাড়া হাট বারোবাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রুস্তম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বগেরগাছি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও এই গরমে থেমে নেই প্রাইভেট বাণিজ্যে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিভাবক বলেন, স্কুল বন্ধ থাক, গরম পড়ুক কিংবা শীত পড়ুক স্যারদের প্রাইভেট পড়ানো বন্ধ নেই। বরাবরই স্কুলে ঠিকমতো না পড়িয়ে প্রাইভেট পড়ানোয় ব্যস্ত তারা। অনেক স্যারের কাছে প্রাইভেট না পড়লে নাম্বার কম দেওয়াসহ ওই ছাত্রকে ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। শিক্ষাব্যবস্থায় প্রাইভেট বাণিজ্যে স্যারদের বেপরোয়া গতি থামানোর কেউ নেই। তাই উপায়ন্ত না পেয়ে বাধ্য হয়ে আমরাও গরম রোদ বৃষ্টি ঝড়ের মধ্যেও বাধ্য হয়ে সন্তানদের প্রাইভেট পড়তে পাঠাই।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত