ঢাকা ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মাদারীপুরে গরমে হাসপাতালে বাড়ছে শিশু রোগী

মাদারীপুরে গরমে হাসপাতালে বাড়ছে শিশু রোগী

তীব্র গরমে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। জ্বর, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে তারা হাসপাতালে আসছে। রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে। এতে একই বেডে দুই থেকে তিনজন এবং মেঝেতে থেকে রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছে। তীব্র গরমের মধ্যে গাদাগাদি করে তাদের চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। মাদারীপুরে তীব্র দাবদাহে জনজীবনে ভোগান্তি নেমে এসেছে। গত ১০ দিন ধরে তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪০ সেলসিয়াসে উঠানামা করছে। মানুষ হিটস্ট্রোকসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আক্রান্তের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধরাই বেশি। গতকাল সরেজমিন জেলা হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডে ১০৮ জন, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ২৫ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। হাসপাতালের ৪০ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে এত সংখ্যক রোগীর চিকিৎসা দিতে চিকিৎসক ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। শয্যা সংকট থাকায় এক শয্যায় দুই থেকে তিনজন রোগী থাকছে। হাসপাতালের মেঝেতেও রোগীরা মাদুর বিছিয়ে থাকছে। এভাবে গাদাগাদি করে থাকতে রোগীসহ অভিভাবকদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। হাসপাতালে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের ৪৯ জন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছে। এর মধ্যে প্রায় ২৫ জনই শিশু। অতিরিক্ত গরমের জন্যই হঠাৎ করে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। হাসপাতালে রোগীর সঙ্গে থাকা ফুপু অদিতি বলেন, ‘আমার ভাইয়ের ছেলে হাসপাতালে ভর্তি। তীব্র গরমে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এখানে এক বেডে দুইজন থাকতে হচ্ছে। বাচ্চার মায়েদের সারা রাত বসে ও দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। কি যে একটা অবস্থা, তা বোঝানো যাবে না।’ রোগীর মা ফারজানা আক্তার বলেন, ‘আমার বাড়ি মাদারীপুরের রঘুরামপুরে। আমার দুই ছেলে অসুস্থ। একটার বয়স ৫ বছর ও ছোটটার বয়স ৭ মাস। বড় ছেলের টাইফয়েড ও ছোট ছেলের নিউমোনিয়া হয়েছে। গত ছয় দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। কিন্তু বেড পাইনি। তাই ফ্লোরে থাকতে হচ্ছে।’ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স নিতু বাড়ৈ বলেন, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ১০৮ জন রোগী ভর্তি আছে। গরমের কারণে কয়েক দিন ধরে শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। কয়েক দিন ধরে গড়ে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ জন শিশু রোগী ভর্তি হচ্ছে। আবার অনেকে সুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। একসঙ্গে এত রোগী থাকায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবুও তারা সাধ্যমতো চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের সিভিল সার্জন ডা. মুনির চৌধুরী বলেন, সারা দেশের মতো মাদারীপুরেও তাপপ্রবাহ বেশি। এরফলে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। তবে এখন পর্যন্ত হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত কেউ হাসপাতালে ভর্তি হয়নি। এখানে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি অসুস্থ হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে বাঁচতে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। বেশি বেশি বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। তবে বেশি ঠান্ডা পানি পান করার প্রয়োজন নেই। যদি রোদের মধ্যে কাজ করতে হয়, তাহলে কিছুক্ষণ পর পর ছায়ায় বিশ্রাম নিতে হবে। টানা রোদের মধ্যে কাজ করা যাবে না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত