ঢাকা ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুপেয় পানির সংকটে কয়রাবাসী

সুপেয় পানির সংকটে কয়রাবাসী

সুন্দরবন উপকূলীয় জনপদ খুলনার কয়রায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। চর্তুদিকে নদ নদীবেষ্টিত কয়রার ৭টি ইউনিয়নের পানি লবণাক্ত হওয়ায় এখানকার বেশিরভাগ মানুষ গোসল, খাওয়া ও রান্নার কাজে পুকুরের পানির ওপর নির্ভরশীল। ৩টি ইউনিয়নে টিউবওয়েলের পানি আশানুরূপ না হওয়ায় লোকজনের পুকুরের পানি ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত বৃষ্টির দেখা না পাওয়ায় বর্তমানে প্রচণ্ড গরমে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় ৯০ শতাংশ পুকুরের পানি ব্যবহার অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় খাবার পানিসহ গোসল ও রান্নার পানির তীব্র সংকটে ভুগছে কয়রার হাজার হাজার পরিবারের লাখো মানুষ। উত্তর বেদকাশি, দক্ষিণ বেদকাশি ও কয়রা সদরের আংশিক এলাকায় টিউবওয়েলের পানি আশানুরূপ হলেও পানির স্তর অনেক নিচে নেমে যাওয়ার কারণে টিউবওয়েলগুলোয় ঠিকমতের পানি উঠছে না। একদিকে পুকুরের পানি প্রায় শূন্যের কোটায় অন্যদিকে নলকূপের পানি ঠিকমতো না ওঠায় পানির জন্য বর্তমানে কয়রার মানুষের মাঝে ত্রাহি অবস্থা বিরাজ করছে। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে জেলা পরিষদের পুকুর ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের খনন করা পুকুরের পানির ওপর হাজার হাজার মান্যুষ নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। দক্ষিণ বেদকাশির গোলখালি, উত্তর বেদকাশি কাছারিবাড়ি, কয়রা সদরের ৪নং কয়রা, মহারাজপুরের কালনা, বাগালীর বামিয়া, আমাদির হাতিয়ারডাঙ্গা, মহেশ্বরীপুরের ভাগবা এলাকায় জেলা পরিষদ ও দুর্যোগব্যবস্থা অধিদপ্তরের পুকুরগুলোয় গিয়ে দেখা গেছে, পুকুরের পাড়ে বসানো পিএসএফ থেকে সকাল-বিকাল লাইন দিয়ে নারী, পুরুষরা খাবার পানি সংগ্রহ করছে। দূর গ্রামের শত শত মানুষ হুড়োহুড়ি করে কলসে পানি ভরে নিয়ে যাচ্ছে। শাকবাড়িয়া নদী সংলগ্ন ৫নং কয়রা গ্রামের ৫ শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশুদের মজিবার হাওলাদার, শাহিন হাওলাদার, আজিজুল গাজী, আক্কাছ হাওলাদার ও আব্দুল্লাহ সরদারের বাড়ির ৫টি পুকুরে প্রতিদিন গোসল করতে দেখা যায়। এখানকার টিউবওলের পানি আশানুরূপ না হওয়ায় এ পুকুরগুলো থেকে গ্রামের লোকজন রান্নার পানি সংগ্রহ করে থাকে। কয়রা সদরের পাড়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা আশরাফ পাড় বলেন, গ্রামের পুকুরগুলোয় গোসল উপযোগি পানি না থাকায় গোসলের জন্য মসজিদের পুকুরে যেতে হয়। উত্তর বেদকাশির বড়বাড়ি গ্রামের বাসিন্দা নুরআলী সরদার জানান, তীব্র তাপদাহে পুকুরে পানির স্তর একবারে নিচে নেমে গেছে। ফলে খাবার পানি, গোসল ও রান্নার পানির চরম সংকটে ভুগছে এলাকার মানুষ। পানীয় জলের সংকট নিরসনে সরকারি উদ্যোগে উপজেলার সর্বত্র বড় বড় মিষ্টি পানির পুকুর খননের দাবি জানান এলাকার সর্বস্তরের মানুষরা। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, সুপেয় পানির সংকট নিরসনে এলাকায় রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। পুকুর সংস্কারে এলজিইডি কাজ করছে বলে তিনি জানান।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত