ঢাকা ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

স্বাধীনতার ৫২ বছরেও নির্মাণ হয়নি ব্রিজ

২০ গ্রামের যোগাযোগের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো

২০ গ্রামের যোগাযোগের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের ধনপতিখোলা ও দৌলতপুর সড়কের আর্সি নদীর উপর স্বাধীনতার ৫২ বছরেও কোন প্রকার ব্রিজ না থাকায় চরম দুর্ভোগের মধ্যে ২০০ ফুট লম্বা সাঁকো দিয়ে পারাপার করতে হ”েছ ২ লক্ষাধিক মানুষের। বাঁশের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে চলাচলের কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এ ¯’ানে একটি ব্রিজের জন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বহু আবেদন-নিবেদন করা হলেও বিভিন্ন সময় আশ্বাসও পাওয়া গেছে। কিš‘ আজও তা বাস্তবায়িত না হওয়ায় এপথে প্রতিদিন যাতায়াতকারী ২০ গ্রামের ২ লক্ষাধিক লোকের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হ”েছ। এলাকাবাসীর দাবি অচিরেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ দিকে নজর দিবে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকাবাসীর চাঁদায় নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে ওই নদী পারাপার হয় বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের ধনপতিখোলা, কালারাইয়া, মোহাম্মদপুর, ঘোড়াশাল, সোনাকান্দা, জোগেরখিল, মেটংঘর, দৌলতপুর গ্রামের মানুষ।

এছাড়া রোয়াচালা, কুড়ুন্ডী, পিপিড়িয়াকান্দা, চুলুড়িয়া, বড়িয়াচুড়া, কুড়াখাল, কালীসিমা, পেন্নই, দিঘিরপাড়,পাজিরপাড়, কাউইন্নামুড়ি, বৃষ্ণপুর, শ্রীকাইল, চন্দনাইল, রামচন্দ্রপুর, বি-চাপিতলাসহ উপজেলার উত্তরাঞ্চলের লোকজনের বাঙ্গরা বাজার থানা সদরের মধ্যে ¯’লপথে যোগাযোগ করতে হলে প্রায় ৬ কিলোমিটার সড়ক ঘুরে আসতে হয়। এ সাঁকো দিয়ে প্রতি দিন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, কামার-কুমার, জেলে-তাঁতি, কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণির-পেশার মানুষসহ প্রায় তিন হাজার লোক যাতায়াত করে থাকে। কিš‘ ব্রিজের অভাব ২০টি গ্রামের লোকজনের পারাপার। প্রায় ১০ একর কৃষিজমিতে কৃষকের উৎপাদিত কৃষি পণ্য বাজারে আনতে ও গবাদিপশু পারাপারের সময় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ফলে প্রতি বছরই এলাকাবাসীর স্বে”ছাশ্রমে ও সহযোগিতায় নিজস্ব অর্থায়নে লাখ টাকা ব্যয়ে এই বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়ে থাকে। কখনো সাঁকোটি হয়ে পরছে ঝুঁকিপূর্ণ। যে কোনো সময় ভেঙে যেতে পারে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পোহাতে হয়- এ এলাকার কয়েক হাজার শিক্ষার্থীদের। এমন ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন কোমলমতি শিশু-কিশোর, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাড়ুয়া শিক্ষার্থী বাধ্য হয়ে সাঁকোর উপর দিয়ে দিনের পর দিন চলাচল করতে হ”েছ। এ এলাকায় কোনো প্রাথমিক, উ”চবিদ্যালয় ও কলেজ নেই।

তাই বাধ্য হয়ে খালের এপাড় ও ওপাড়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে লেখাপড়া করতে হয়। যার ফলে অভিভাবকদের থাকতে হয় আতঙ্কের মধ্যে। কখনো পা ফসকে বই-খাতা পড়ে যায় খালে, অনেকে আহত হয়ে ভয়ে লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়েছে। বর্ষা মৌসুমে জোয়ার আসে। শুকনো মৌসুমে পানি তেমন একটা থাকে না। যুগ যুগ ধরে এ এলাকার লোকজন অবহেলিত হয়ে বসবাস করছেন। দেশজুড়ে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও এ এলাকা বঞ্চিত হয়ে আছে। কোনো ব্যক্তি অসু¯’ হলে বাড়ি থেকে কাঁধে করে উপজেলা সদরের হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। ব্রিজটি নির্মাণ করা হলে যানবাহন যোগে অসু¯’ ব্যক্তিসহ লোকজন খুব সহজেই যাতায়াত করতে পারতেন। এ এলাকার লোকজনের যাতায়াতে নতুন দিগন্ত তৈরি হবে বলে ¯’ানীয়দের আশা।

বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাহার খান বলেন, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি আর্সি নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণের। আমি অনেকবার এমপি-মন্ত্রীর কাছে গিয়েও বরাদ্দ পাইনি। সেতুটি নির্মিত হলে মুরাদনগর উপজেলা উত্তরাঞ্চলের ২০ গ্রামের লোকদের দুর্ভোগ কমবে। আরো উন্নত হবে তাদের জীবনমান।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত