ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কেশবপুরে তিন নদনদী ভরাট জলাবদ্ধতার শঙ্কা

কেশবপুরে তিন নদনদী ভরাট জলাবদ্ধতার শঙ্কা

যশোরের কেশবপুরে তিনটি নদনদী পলি পড়ে ভরাট হয়ে মৃত অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সেগুলো এখন কচুরিপানায় পরিপূর্ণ। চলতি মৌসুমে বর্ষায় যে কোনো সময় নদীর পানি উপচে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। কেশবপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুরের বুক চিরে হরিহর ও কপোতাক্ষ নদ এবং বুড়িভদ্রা ও আপারভদ্রা নদী বয়ে গেছে। এর মধ্যে কপোতাক্ষ নদ প্রবহমান রয়েছে। কেশবপুরে শহরের পূর্বপাশ দিয়ে হরিহর নদ আর পশ্চিম পাশ দিয়ে বুড়িভদ্রা নদী প্রবাহিত হয়েছে। নদনদী দুটি এখন পলি পড়ে ভরাট হয়ে প্রায় মৃত অবস্থা। একই অবস্থা আপারভদ্রা নদীরও। হরিহর ও বুড়িভদ্রা এখন পুরোটাই কচুরিপানায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। হরিহর নদ পলি পড়ে ভরাট হওয়ার কারণে ২০১৭ সালে কেশবপুর শহর ডুবে গিয়ে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এক মাস শহর জলমগ্ন হয়ে থাকে। পরে ২০১৯ সালে হরিহর নদ খনন করা হয়। ৩ বছরের মাথায় সেই নদ আবার পলি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বড়েঙ্গা ত্রিমোহনা থেকে শুরু করে মনিরামপুরের বাধাঘাট শ্মশান পর্যন্ত হরিহর নদ কচুরিপানায় পরিপূর্ণ। বড়েঙ্গা গ্রামের কৃষক আবদুস সাত্তার বলেন, আপারভদ্রা ও হরিহর এখন ৫ থেকে ৬ ফুট পলি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। এক মাস আগে বড়েঙ্গা সেতুর নিচে ছেলেরা ক্রিকেট খেলেছে। কেশবপুর উপজেলার মজিদপুর গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল হক বলেন, নদে একটুও পানি নেই, কচুরিপানায় ভরে রয়েছে। কেশবপুর শহরের বাসিন্দা মনিরুজ্জামান বলেন, সারা দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। হরিহর নদে বদ্ধ স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশা বংশবিস্তার করার সম্ভাবনা আছে। এ নিয়ে কেউ ভাবছে না। স্থানীয় লোকজন জানান, আপারভদ্রা, হরিহর ও বুড়িভদ্রার ত্রিমোহনায় এখন হাঁটুপানি। তারা বলেন, এই মৌসুমে ভারী বৃষ্টি হলেই কেশবপুর শহরে জলাবদ্ধতা হয়ে যাবে। কারণ, পানি এসব নদনদী দিয়ে নিষ্কাশিত হবে না। যশোর জেলা বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান নান্নু বলেন, হরিহর নদ আবার ভরাট হয়ে যাওয়ায় ভারী বৃষ্টি হলেই কেশবপুর শহর জলাবদ্ধ হয়ে পড়তে পারে। এখনই জরুরিভিত্তিতে নদ খনন করতে হবে। কেশবপুর নাগরিক সমাজের সভাপতি ও পানি সরাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, কেশবপুরের হরিহর, বুড়িভদ্রা ও আপারভদ্রা নদ মরে গেলে পরিবেশ এবং প্রতিবেশ নষ্ট হয়ে যাবে। কেশবপুর শহরকে বাঁচাতে হলে নদ-নদী সচল রাখা খুবই প্রয়োজনীয়।

কেশবপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম বলেন, কেশবপুর পৌরসভার খোঁজাখাল, বুড়ীভদ্রা ও হরিহর নদীর পৌর অংশটুকু পলিতে ভরাট হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে নদী খনন করা না হলে আগামী বর্ষা মৌসুমে পৌর এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়ে যাবে। এরইমধ্যে ভোগতী নরেন্দ্রপুরসহ কয়েকটি বিলে পানির কারণে এ বছর বোরো ধানের আবাদ করতে পারেনি কৃষকরা। এ ব্যাপারে কেশবপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রকৌশলী মুনির হোসেন শিকদার বলেন, চলতি মাসে তারা হরিহর নদ পরিদর্শন করেছেন। নদের অনেক জায়গায় দখল হয়ে গেছে। বিশেষ করে এ নদের উৎসস্থল ঝিকরগাছার কপোতাক্ষ নদ এলাকায় দখল হয়ে গেছে। এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। দখলমুক্ত করে নদ খনন করা হবে। অন্য নদীগুলোও প্রয়োজনে খনন করা হবে বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত