সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলে সুপেয় পানির সংকট

প্রকাশ : ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা

উপকূলে পানির অভাব নেই, তবুও চারদিকে পানির জন্য হাহাকার। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সাতক্ষীরা জেলার উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগর ও আশাশুনি এলাকার পানি ও জমিতে বাড়ছে লবণাক্ততা। গ্রীষ্মে ওই সব এলাকায় দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। খাবার পানি সংগ্রহের জন্য নারী ও শিশুদের ছুটতে হচ্ছে গ্রাম থেকে গ্রাম, মাইলের পর মাইল। সরকারি প্রকল্পে সীমিত কিছু পরিবারে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও পুকুরের পানি শোধন করে সরবরাহ করা হলেও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। এদিকে সাতক্ষীরা জেলাজুড়ে আশঙ্কাজনক হারে নামছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর। গরম শুরু হওয়ার আগেই এ স্তর নেমেছে ৩২ থেকে ৪০ ফুট পর্যন্ত। কমে গেছে টিউবওয়েলে পানি ওঠা।

বৃষ্টির অভাব ও অপরিকল্পিতভাবে গভীর-অগভীর নলকূপ স্থাপনের কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় ফসল উৎপাদনে প্রভাব, পানিতে লবণের পরিমাণ বৃদ্ধিসহ পরিবেশ বির্পযয়ের আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। সাতক্ষীরার শ্যামনগরে খাবার পানি সংগ্রহে মাইলের পর মাইল পথ পাড়ি দিতে হয় মানুষকে। জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অপরিকল্পিতভাবে ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলন এবং লবণাক্ততার সমস্যা দূর করতে সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে গৃহীত উদ্যোগ তদারকির অভাবে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি স্থানীয় পরিবেশ কর্মীদের। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর শ্যামনগর উপজেলা কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, উপকূলীয় এ এলাকার ৪০ শতাংশ মানুষ খাবার পানির সংকটে রয়েছে। সরকারিভাবে এ তথ্য দেওয়া হলেও বাস্তবের চিত্র আরও ভয়াবহ বলে দাবি স্থানীয়দের। শ্যামনগর উপকূলের মানুষ খাওয়ার পানি ও দৈনন্দিন কাজের জন্য মূলত পুকুর ও বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভরশীল। তবে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অপরিকল্পিত চিংড়ি চাষ, চিংড়ি ঘেরের আউটড্রেন না থাকা, নদীর প্রবাহ আটকে দেওয়া, পুকুর ভরাট ও খাল বেদখলের কারণে প্রান্তিক মানুষ নিরাপদ পানির তীব্র সংকটের সম্মুখীন হচ্ছেন। সাধারণত শীত মৌসুম থেকে বর্ষা আসার আগ পর্যন্ত একটা লম্বা সময় এ দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে যেতে হয় উপকূলবাসীকে। শ্যামনগর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপেজেলায় এক হাজার ৯৪৯টি গভীর, ৪৯১টি অগভীর, ৫০০টি এসএসটি ও ৪৪১টি ভিএসএসটি নলকূপ রয়েছে। এর মধ্যে আটটি গভীর, ১২৯টি অগভীর, ১৬টি এসএসটি ও ৪৪টি ভিএসএসটি নলকূপ কয়েক বছর ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী এলাকার আব্দুল আলিম, গাজী মোশারফ হোসেন বলেন, এক কলস পানির জন্য দুই-তিন ঘণ্টা প্রচণ্ড রোদের মধ্যে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।