ঢাকা ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলে সুপেয় পানির সংকট

সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলে সুপেয় পানির সংকট

উপকূলে পানির অভাব নেই, তবুও চারদিকে পানির জন্য হাহাকার। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সাতক্ষীরা জেলার উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগর ও আশাশুনি এলাকার পানি ও জমিতে বাড়ছে লবণাক্ততা। গ্রীষ্মে ওই সব এলাকায় দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। খাবার পানি সংগ্রহের জন্য নারী ও শিশুদের ছুটতে হচ্ছে গ্রাম থেকে গ্রাম, মাইলের পর মাইল। সরকারি প্রকল্পে সীমিত কিছু পরিবারে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও পুকুরের পানি শোধন করে সরবরাহ করা হলেও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। এদিকে সাতক্ষীরা জেলাজুড়ে আশঙ্কাজনক হারে নামছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর। গরম শুরু হওয়ার আগেই এ স্তর নেমেছে ৩২ থেকে ৪০ ফুট পর্যন্ত। কমে গেছে টিউবওয়েলে পানি ওঠা।

বৃষ্টির অভাব ও অপরিকল্পিতভাবে গভীর-অগভীর নলকূপ স্থাপনের কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় ফসল উৎপাদনে প্রভাব, পানিতে লবণের পরিমাণ বৃদ্ধিসহ পরিবেশ বির্পযয়ের আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। সাতক্ষীরার শ্যামনগরে খাবার পানি সংগ্রহে মাইলের পর মাইল পথ পাড়ি দিতে হয় মানুষকে। জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অপরিকল্পিতভাবে ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলন এবং লবণাক্ততার সমস্যা দূর করতে সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে গৃহীত উদ্যোগ তদারকির অভাবে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি স্থানীয় পরিবেশ কর্মীদের। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর শ্যামনগর উপজেলা কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, উপকূলীয় এ এলাকার ৪০ শতাংশ মানুষ খাবার পানির সংকটে রয়েছে। সরকারিভাবে এ তথ্য দেওয়া হলেও বাস্তবের চিত্র আরও ভয়াবহ বলে দাবি স্থানীয়দের। শ্যামনগর উপকূলের মানুষ খাওয়ার পানি ও দৈনন্দিন কাজের জন্য মূলত পুকুর ও বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভরশীল। তবে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অপরিকল্পিত চিংড়ি চাষ, চিংড়ি ঘেরের আউটড্রেন না থাকা, নদীর প্রবাহ আটকে দেওয়া, পুকুর ভরাট ও খাল বেদখলের কারণে প্রান্তিক মানুষ নিরাপদ পানির তীব্র সংকটের সম্মুখীন হচ্ছেন। সাধারণত শীত মৌসুম থেকে বর্ষা আসার আগ পর্যন্ত একটা লম্বা সময় এ দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে যেতে হয় উপকূলবাসীকে। শ্যামনগর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপেজেলায় এক হাজার ৯৪৯টি গভীর, ৪৯১টি অগভীর, ৫০০টি এসএসটি ও ৪৪১টি ভিএসএসটি নলকূপ রয়েছে। এর মধ্যে আটটি গভীর, ১২৯টি অগভীর, ১৬টি এসএসটি ও ৪৪টি ভিএসএসটি নলকূপ কয়েক বছর ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী এলাকার আব্দুল আলিম, গাজী মোশারফ হোসেন বলেন, এক কলস পানির জন্য দুই-তিন ঘণ্টা প্রচণ্ড রোদের মধ্যে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত