তিতাসে প্রকৃতির রাণী কৃষ্ণচূড়া
প্রকাশ : ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
তিতাস (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
চোখ ধাঁধানো কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম রঙে সেজেছে প্রকৃতি। কুমিল্লার তিতাস উপজেলার গ্রামীণ জনপদে কৃষ্ণচূড়া গাছে ফুলের সমারোহ বর্ণময় করে তুলেছে চারপাশ। টুকটুকে লাল, কমলা, হলুদ ফুল এবং উজ্জ্বল সবুজ পাতা দিয়ে নতুনরূপে প্রকৃতির অপরূপ রঙে সেজেছে কৃষ্ণচূড়া গাছের আশপাশের এলাকা।
তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে দূর থেকেও পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এ ফুল। ‘গন্ধে উদাস হাওয়ার মতো উড়ে তোমার উত্তরী কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জুরিত’ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের মতো অনেকেই বাংলা কবিতা- গানে উপমা হিসেবে এনেছেন কৃষ্ণচূড়াকে। শোভা বর্ধনকারী এ বৃক্ষটি গ্রামীণ জনপদের পাশাপাশি শহরের পথে-প্রান্তরেও শোভাবর্ধন করে যাচ্ছে। গ্রীষ্মে যখন এই ফুল ফোটে, তখন এর রূপে মুগ্ধ হয়ে পথচারীরা থমকে দাঁড়ায়। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড খরতাপে বিশুদ্ধ অক্সিজেনের পাশাপাশি এসব গাছ দিচ্ছে ক্লান্ত দেহে ছায়া আর মনে প্রশান্তির পরশ। গৌরীপুর-হোমনা সড়কের মৌটুপী বাস স্টেশন, উপজেলা পরিষদের চত্বর, গাজীপুর খান সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজের চোখ ঝলসানো কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো এ পথে যাতায়াতকারীদের নজর কাড়ে। গাছে দৃষ্টি দিলে দেখা যায়, যেন আগুন ধরে গেছে। কড়া লাল বর্ণের ফুলভর্তি গাছটিতে পাতার দেখা মেলা ভার। শুধু এখানে নয়; এ পথের দু’পাশের দূর-দূরান্তের গ্রামগুলোতে তাকালে চোখে পড়ে কৃষ্ণচূড়ার রাজত্ব। বলরামপুর ইউনিয়নের কালাইগোবিন্দপুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. কাউছার আহমেদ বলেন, প্রচণ্ড গরমেও কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে শীতল ছায়া অনুভূত হয়। তাই অনেকে ক্লান্ত শরীরে শান্তির পরশ খুঁজে পায়।
জানা যায়, কৃষ্ণচূড়া উদ্ভিদ উচ্চতায় কম (সর্বোচ্চ ১২ মিটার) হলেও শাখা-পল্লবে এটি বেশি মাত্রায় ছড়ায়। শুষ্ক অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে কৃষ্ণচূড়ার পাতা ঝড়ে গেলেও, নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এটি চিরসবুজ। কৃষ্ণচূড়া ফুলের রঙ উজ্জ্বল লাল। পত্র ঝরা বৃক্ষ, শীতে গাছের সব পাতা ঝরে যায়। বাংলাদেশে বসন্তকালে এ ফুল ফোটে। ফুলগুলো বড় চারটি পাপড়িযুক্ত। পাপড়িগুলো প্রায় ৮ সেন্টিমিটারের মতো লম্বা হতে পারে। কৃষ্ণচূড়া জটিল পত্রবিশিষ্ট এবং উজ্জ্বল সবুজ। প্রতিটি পাতা ৩০-৫০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ২০-৪০টি উপপত্রবিশিষ্ট। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফ আব্দুল্লাহ মুস্তাফিন বলেন, প্রকৃতির সৌন্দর্যবর্ধক এই কৃষ্ণচূড়া গাছ রক্ষায় আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নইলে যান্ত্রিক আর ব্যস্ততার ভিড়ে এক সময় খর্ব হবে প্রকৃতির সৌন্দর্যের ভারসাম্য।