পিরোজপুর জেলার কাউখালী সন্ধ্যা নদীর কোলঘেঁষে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত হয় খাদ্যশস্য রাখার জন্য ৬টি সরকারি খাদ্য গুদাম। বর্তমানে অযত্নে অবহেলায় সংস্কারের অভাবে ঐতিহ্যবাহী এ খাদ্য গুদামের ভবনগুলো ব্যবহার অনুপযোগী ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। খাদ্য গুদামের ৫টি ভবনের ৪টিই এখন প্রায় ব্যবহারের অনুপযোগী। ছয়টি ভবনের একটি উপজেলা পরিষদের সামনে জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সন্ধ্যা নদীর তীরে অন্য ভবনগুলো কোনোরকম জোড়াতালি দিয়ে চলছে। এক সময় এই ভবনগুলোতে এ অঞ্চলের খাদ্যের মালামাল রাখার সুব্যবস্থা ছিল। কালের প্রবাহে এ অঞ্চলের অন্যান্য জায়গায় নুতন খাদ্য গুদাম নির্মিত হওয়ায় খাদ্যশস্য রাখার স্থান ভাগ হওয়ার ফলে এই গুদামগুলো কিছুটা গুরুত্ব কমে যায়। এ গুদামে বছরে এখনও প্রায় ২ হাজার মে.টন খাদ্যসামগ্রী ওঠানামা করে। নদীর তীরবর্তী ভবনগুলো একমাত্র কারণ ছিল উপমহাদেশের জাহাজে ও দেশীয় জাহাজে করে নদী দিয়ে এই গুদামে খাদ্যসামগ্রী রাখা সহজ ব্যবস্থা ছিল। অথচ সরকারের এই বৃহৎ গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য ভবনে ওঠানামার জেটিটি দীর্ঘ কয়েক যুগেও নির্মাণ করা হয়নি। খাদ্য গুদামের সর্দার নুরুল ইসলাম জানান, জাহাজ থেকে মাল ওঠানামা করতে গিয়ে শ্রমিকরা প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয়। তিনি আরো জানান, এই কারণে অনেক শ্রমিক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। নদীর তীরে পাইলিং-এর ব্লক থাকায় যেকোনো সময় শ্রমিকদের দুর্ঘটনায় মৃত্যু ঘটতে পারে। যারফলে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। শুধু জেটি নয় সীমানা প্রাচীরও নদীভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে খাদ্য গুদামের আবাসিক ও অফিস ভবনগুলো সীমান প্রাচীর না থাকায় অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। সাধারণ মানুষ চলাচলের ব্যবস্থা থাকার কথা না থাকলেও অবাধে সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে এখানে এখন মাদক ও উঠতি বয়সি ছেলে-মেয়েদের অনৈতিক কার্যকলাপের নিরাপদ স্থান বলে অনেকেই মনে করেন। সবমিলিয়ে খাদ্য গুদাম এলাকা এখন অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, আমি এই স্টেশনে নুতন। খাদ্য গুদামের সকল সমস্যা নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। তবে খাদ্য গুদামের পাইলিং-এর কাজ শেষে সীমানা প্রাচীর ও জেটির জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।