ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শাহরাস্তিতে সিএনজি অটোরিকশা থেকে চাঁদাবাজি

শাহরাস্তিতে সিএনজি অটোরিকশা থেকে চাঁদাবাজি

চাঁদপুরের শাহরাস্তির দোয়াভাঙ্গা বাজার, কালীয়াপাড়া, কালীবাড়ি, ঠাকুর বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নামে সিএনজি অটোরিকশা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় কয়েকজন চালকের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন দোয়াভাঙ্গা বাজারের প্রধান সড়ক দিয়ে চাঁদপুর-কুমিল্লা, মুদাফফরগঞ্জ, হাজীগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় ২০০ থেকে ৩০০ সিএনজি-অটোরিকশা চলাচল করে। এসব যানবাহন থেকে মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন সাদা ও লাল রসিদের মাধ্যমে ১০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দোয়াভাঙ্গা বাজার মেইন রোডে শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষে শ্রমিকদের কল্যাণের নামে সাদা রসিদের মাধ্যমে টাকা আদায় করেন রাজু নামে এক লাইনম্যান। তিনি জানান, দৈনিক কাজ করে ৪০০ টাকা পারিশ্রমিক পান তিনি। এছাড়া দোয়াভাঙ্গা বাজারসহ শাহরাস্তির বিভিন্ন এলাকায় কয়েকজন লাইনম্যান আছেন। তারা তদারকির দায়িত্ব পালন করেন। চাঁদা আদায়কারী কয়েকজন জানান, আমরা আগে থেকেই চাঁদপুর সিএনজি পরিবহন মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের শ্রমিক কল্যাণের জন্য রসিদ দিয়ে টাকা নিচ্ছি। এ বিষয়ে সিএনজিচালক ফয়সাল, মুসাসহ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, টাকা না দিলে লাইনম্যান ও টাকা আদায়কারীরা গাড়ির চাবি রেখে দেন। তারা আরো বলেন, শ্রমিক কল্যাণের নামে চাঁদা আদায় করলেও গেল ঈদুল ফিতরে আমাদের ঈদসামগ্রী দেয়া হয়নি। এ বিষয়ে দোয়াভাঙ্গা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন মুঠোফোনে বলেন, শ্রমিকদের কল্যাণে রসিদের মাধ্যমে আদায়কৃত টাকা দিয়ে আমাদের অফিস ভাড়া, কর্মচারীদের বেতনসহ বিভিন্ন খরচ চালানোয় সব পরিবহন শ্রমিককে সাহায্য করতে পারছি না। তাই আমরা মালিক সমিতির নিকট টাকা জমা দিই। প্রতি মাসে যেসব শ্রমিক সাহায্যের জন্য লিখিত আবেদন করেন, মাস শেষে মালিক সমিতির সাথে মিটিং করে তাদের কিছু সহযোগিতা করছি। দোয়াভাঙ্গা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামাল হোসেন মুঠোফোনে বলেন, কুমিল্লা-চাঁদপুর মহাসড়কে আমাদের কোনো লাইনম্যান নেই। কালীবাড়ি, ঠাকুরবাজার স্ট্যান্ডসহ গ্রামীণ হাটবাজার স্ট্যান্ডে লাল রসিদের মাধ্যমে টাকা আদায় করি। যে টাকা আদায় করি, তাতে সব শ্রমিকের কল্যাণে কাজ করতে পারি না। যারা লিখিত আবেদন করেন, তাদের কিছু সাহায্য করি। চাঁদপুর সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন মুঠোফোনে বলেন, শ্রমিক ইউনিয়ন ভিন্ন সংগঠন। শ্রমিক ইউনিয়নের টাকা মালিক সমিতিতে জমা হয় না। আমাদের সিএনজি মালিক সমিতি সরকার অনুমোদিত। দোয়াভাঙ্গা বাজারে যানজট নিরসনের জন্য সাতজন লোক লাইনম্যান হিসেবে কাজ করছেন। তাদের দৈনিক বেতন দিচ্ছি। আমাদের কাজের বিষয়ে প্রশাসন অবগত আছে। তিনি আরো বলেন, জেলা শহরসহ অন্য উপজেলায় প্রতিটি অটো-সিএনজি এবং অটোরিকশা চালক থেকে দৈনিক ৩০ থেকে ৪০ টাকা আদায় করছে, সেগুলোর কি হবে? কচুয়া-শাহরাস্তির ট্রাফিক ইন্সপেক্টর এসএম কামরুল হাসান মুঠোফোনে বলেন, মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়ন দুইটি ভিন্ন সংগঠন। শ্রমিকদের কল্যাণে আদায়কৃত টাকা মালিক সমিতিতে জমা হবে কেন? সিএনজি-অটোচালকদের গাড়ির চাবি আটকে রাখলে তারা যদি আমাকে এবং থানার অফিসার ইনচার্জকে অবহিত করে, তাহলে আমরা অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেব। মালিক সমিতি দোয়াভাঙ্গা স্ট্যান্ড থেকে যেসব সিএনজি-অটো অবস্থান করবে এবং ছেড়ে যাবে শুধু সেগুলো থেকে লাইনম্যানদের জন্য টাকা আদায় করতে পারে। কিন্তু এই সড়ক দিয়ে হাজীগঞ্জ-চাঁদপুর, মুদাফরগঞ্জ, কুমিল্লাসহ অন্যান্য এলাকায় চলাচলকৃত সিএনজি-অটো থেকে টাকা আদায় করা যাবে না। শাহরাস্তি থানা অফিসার ইনচার্জ মো. আলমগীর হোসেন মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি আমাদের নলেজে নেই। আমরা খতিয়ে দেখব। কেউ যদি অভিযোগ করে তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত