নওগাঁয় থ্যালাসেমিয়া রোগী ও স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস পালিত হয়েছে। নওগাঁ শহরে স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় স্থানীয় এক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষ্যে বেলা ১০টা থেকে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। নওগাঁ ব্লাড সার্কেলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: তারিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডাক্তার আব্দুল মতিন। ডাক্তার আব্দুল মতিন বলেন, ‘থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তের রোগ। থ্যালাসেমিয়া ধারণকারী মানুষ সাধারণত রক্তে অক্সিজেন স্বল্পতা বা অ্যানিমিয়াতে ভুগে থাকেন। থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে তাদের সন্তানের রোগটি দেখা দিতে পারে।
তাই নিজে বাহক কি না, তা জানতে হিমোগ্লাবিন ইলেকট্রোফরেসিস টেস্ট করে নিতে হবে। থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধই সর্বোত্তম। দেশে প্রায় দেড় থেকে ২ কোটি মানুষ থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক এবং কমপক্ষে প্রায় ৬০-৭০ হাজার থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশু-কিশোর রয়েছে। থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে, দীর্ঘমেয়াদি সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে পাঠ্যসূচিতে থ্যালাসেমিয়ার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার। শতভাগ প্রতিরোধযোগ্য থ্যালাসেমিয়া নিয়ে সচেতনতা জরুরি। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীরা অন্যের দেওয়া রক্তের ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকেন।
কিন্তু, প্রয়োজনের তুলনায় রক্তদাতার সংখ্যা অপ্রতুল হওয়ায় তাদের প্রচুর ভোগান্তি পোহাতে হয়।’ অনুষ্ঠানের সভাপতি মো: তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘১৯৯৪ সালে থ্যালাসেমিয়া নিয়ে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে ৮ মে বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস ঘোষণা করা হলেও শতভাগ প্রতিরোধযোগ্য রোগটি বাংলাদেশে অপরিচিত এবং অবহেলিতই রয়ে গেছে। নওগাঁ ব্লাড সার্কেল তার সীমিত সামর্থ্যরে সর্বোচ্চটুকু দিয়ে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের সেবা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত আমরা বিভিন্ন রোগীদের পাঁচ হাজারের অধিক ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে দিয়েছি।
এছাড়া প্রতি মাসে ২২ জন থ্যালাসেমিয়া রোগীর রক্ত সংগ্রহের দায়িত্ব নিয়েছি।’ উপস্থিত থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশু মারজিয়ার মা বলেন, ‘আমার মেয়ে ৬ বছরের শিশু। প্রথম প্রথম রক্তদাতা খুঁজে পেতে আমার খুব কষ্ট হতো। নওগাঁ ব্লাড সার্কেলের সঙ্গে যোগাযোগের পর থেকে নিশ্চিন্ত থাকি এখন। ওরা সম্মানের সঙ্গে ব্লাড খুঁজে এনে দেয়।’ উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২ অক্টোবর প্রতিষ্ঠা হয় নওগাঁ ব্লাড সার্কেল। স্বেচ্ছাসেবী এই সংগঠনটি রক্তদান ও থ্যালাসেমিয়া সচেতনতায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।