হবিগঞ্জের মাধবপুরে চলতি বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হলেও দাম নিয়ে কৃষকরা হতাশায় পড়েছে। উৎপাদন খরচের চেয়ে অনেক কম দামে কৃষকরা ধান বিক্রি করছেন। সরকারিভাবে প্রতি কেজি ধান ৩২ টাকা দরে নির্ধারণ করা হলেও সাধারণ কৃষকরা এ দরে সরকারি খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করার কোনো সুযোগ পাচ্ছে না। সাধারণ কৃষকদের কাছে ৩২ টাকা দরে ধান বিক্রি করা যায় এ ধরনের খবর পৌঁছেনি। এছাড়া অনলাইনে আবেদন করে ধান বিক্রি করতে হয় সাধারণ কৃষকরা এটি করতে আগ্রহী নয়। এ সুযোগে এক ফড়িয়া ধান ব্যবসায়ী কৃষকদের কাছ থেকে ৮৫০ টাকা থেকে ৯০০ টাকার মণ দরে ধান ক্রয় করছে। টাকার অভাবে কৃষকরা বাধ্য হয়ে কম দামে ধান বিক্রি করছে। উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, মাধবপুরে ১২ হাজার একরজুড়ে বোরো ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। প্রায় ৭০ ভাগ ধান কর্তন করা হয়েছে। শাহজাহানপুর ইউনিয়নের কৃষক শের আলী বলেন, এ বছর সার, বীজ, ডিজেল, বিদ্যুৎ, জমি চাষাবাদ ও ধান কর্তন খরচ বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে গেছে। এক মণ ধান উৎপাদন করতে কমপক্ষে ১ হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু এখন এক মণ শুকনো ধান বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ টাকা থেকে ৯০০ টাকার মধ্যে। ধানের এ ধরনের দামে কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। ধানের ন্যায্য মূল্য না পেলে কৃষকরা ধান চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। বুল্লা ইউনিয়নের কৃষক রাসেল মিয়া জানান, সরকার প্রতি কেজি ধানের দাম নির্ধারণ করেছে ৩২ টাকা। কিন্তু কৃষকরা এর সুফল পাচ্ছে না। এর কারণ হচ্ছে গ্রাম পর্যায়ে কৃষকরা এ ধরনের সংবাদ এখনও পায়নি। এছাড়া অনলাইনে আবেদন করার জটিলতায় স্বপ্ল শিক্ষিত কৃষকরা এ কাজটি করতে পারছে না। মাধবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সজীব সরকার জানান, সরকারিভাবে ৩২ টাকা কেজি দরে ধান সংগ্রহ করা হয় মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের জানানো হয়েছে। তবে এ কাজটি মূলত উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস। কম দামে ধান বিক্রি হলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মাধবপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা শাহানা সুলতানা বলেন, মাধবপুরে এখনো ধান সংগ্রহ শুরু হয়নি। ১৫ মে পর্যন্ত কৃষকরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। এখন যেহেতু ধান কাটা মাড়াইয়ের মৌসুম এ কারণে ধানের দাম কমতে পারে।