সিঙ্গাপুর প্রবাসী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম হেলিকপ্টারে নববধূকে নিয়ে নামলেন প্রত্যন্ত এলাকার এক স্কুল মাঠে। চারপাশে তখন উৎসুক জনতা। তা থেকে বেরিয়ে এলেন এক দম্পতি। গত মঙ্গলবার দুপুরে এমন এক ভিন্ন আয়োজনের দেখা মিলল পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় মাড়েয়া ইউনিয়নের মাড়েয়া মডেল হাই স্কুল মাঠে। মেঘনা এভিয়েশনের একটি হেলিকপ্টারে চড়ে অবতরণ করলে তাদের ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানালেন সবাই। প্রকৌশলী শহিদুলের স্বপ্ন ছিল হেলিকপ্টরে করে বউকে নিয়ে গ্রামে যাওয়ার। সেই স্বপ্ন পূরণের জন্যই এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের আলোকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা শহর আলী ও রহিমা বেগমের ছেলে পঞ্চম ছেলে শহিদুল ইসলাম। ২০০৭ সালে সিঙ্গাপুরে গিয়ে সেখানকার ন্যাশনাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পড়াশোনা করেন। এরপর প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করলেও বর্তমানে নিজের কনস্ট্রাকশন কোম্পানি পরিচালনা করে আসছেন। এর মধ্যেই ২০২৩ সালের নভেম্বরে উভয় পরিবারের সম্মতিতে সিঙ্গাপুরীয়ান এই তরুণী মাইশাকে বিয়ে করে জীবনসঙ্গী করেন তিনি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, টিভি ও মোবাইলে হেলিকপ্টারের অনেক ছবি দেখেছি। কিন্তু কখনো সরাসরি দেখার সৌভাগ্য হয়নি। আজ আমাদের এলাকার ছেলে এই সুযোগ করে দিয়েছে। তাই আমরা পরিবারের সদস্যরা মিলে হেলিকপ্টার ও নববধূকে দেখতে এসেছি। আলেয়া বেগম নামে আরেক নারী বলেন, কয়েকদিন ধরে শুনছি আমাদের এলাকায় বিদেশি বউ হেলিকপ্টারে আসবে। তাই সকাল থেকে তাদের দেখতে স্কুল মাঠে অপেক্ষা করছি। স্থানীয় প্রতিবেশী আমিরুল হক ও নুরুল ইসলাম বলেন, আজ আমাদের অনেক ভালো লাগছে। কারণ আমাদের এলাকার ছেলে শহিদ বিদেশ থেকে হেলিকপ্টারে ফিরেছে। সাথে নতুন বিদেশি বউ নিয়ে এসেছে। তাদের দেখে আমরা সবাই খুবই আনন্দিত। আজ আমাদের হেলিকপ্টার দেখার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। শহিদের বড় ভাই রবিউল ইসলাম বলেন, আমার ছোট ভাই সিঙ্গাপুরে দীর্ঘদিন ধরে থাকছে। সে সেখানে বিয়ে করে নতুন বউকে নিয়ে এবার প্রথম দেশে এসেছে। তার ইচ্ছা ছিল নববধূকে হেলিকপ্টারে নিয়ে আসবে। তাই তাদের আসার পর আমরা তাদের বরণ করে নিয়েছি। বর শহিদুল ইসলাম শহিদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সিঙ্গাপুরে থাকছি। আমার স্বপ্ন ছিল হেলিকপ্টার করে আমার স্ত্রী ও ডাইরেক্টরকে নিয়ে বাংলাদেশে আসা। সেই স্বপ্ন থেকে আজ নিজ জন্মভূমিতে ফিরেছি। খুব ভালো লাগছে, আমাদের বরণ করে নিতে পরিবারের পাশাপাশি এলাকার মানুষ এসেছে।
তবে আরো ভালো লাগছে, যে স্কুল থেকে পড়াশোনা করে আজ আমি বিদেশে গিয়েছি। সে স্কুল মাঠেই আমাদের হেলিকপ্টার অবতরণ হয়েছে। এদিকে এমন ভালোবাসা পেয়ে সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছে সিঙ্গাপুরীয়ান ওই নববধূ।