ভারত পানি না দেয়ায় খরস্রতা তিস্তা নদীতে স্বাভাবিক পানিপ্রবাহটুকুও নেই, ফলে তিস্তা পরাপার হতে লাগে না নৌকা, হাঁটুপানি ভেঙে হেঁটেই নদী পার হচ্ছে চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ।
সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, মৌসুমি বৃষ্টির অভাবে সৃষ্ট তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন অতিষ্টের পাশাপাশি তিস্তা নদীতে মাছ ধরে, নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন এমন মানুষজন দিশাহারা হয়ে পড়েছে। নৌকার মাঝি কিয়া মুদ্দিন (৫০) বলেন, তিস্তায় পানি না থাকায় নদী পারাপারে এখন আর নৌকা লাগে না। লোকজন হেঁটে পার হয় নদী। ডিমলা উপজেলার কিসামত ছাতনাই গ্রামের আজর উদ্দিন (৪৫) বলেন, নদীতে পানি কম থাকায় মাছই পাওয়া যায়, তাই মাছ মারতে নদীতে কেউ আসে না। নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার দোহল পাড়া আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ১০ শ্রেণির মাহামুদা, ৮ম শ্রেণির ঝড়না, ৭ম শ্রেণির আঞ্জু বলে, নদীতে পানি নাই বলে নৌকা চলে না, তাই আমারা এভাবেই নদী পর হয়ে স্কুলে যাই-আসি। আমাদের সবার বাড়ি কিসামত ছাতনাই চরে। উপজেলার পূর্বছাতনাই গ্রামের নুর আলম (৬০) বলেন, কিসামত ছাতনাই গ্রামে কোন স্কুল না থাকায় চরের বাচ্চাগুলো অনেক কষ্ট করে স্কুলে আসা-যাওয়া করে। এলাকার সচেতন ব্যক্তিদের মতে খড়া মৌসুমে ভারত গজলডোবা ব্যারাজের মধ্যে পানি আটকিয়ে রাখায় তিস্তা নদীর স্বাভাবিক পানি প্রবাহটুকু নেই। এর কারণে তিস্তা নদীর বুকে জেগে উঠেছে অসংখ্য চর। তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়াতে জলাবায়ুর পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে এ অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য জীবন জীবিকা ধ্বংস হয়ে যাওয়া আশঙ্কার রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া পত্তর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলার মতে ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ ছিল প্রায় ৬০০০ হাজার কিউসেক। পাউবো’র সেচের আওতায় এ বছর ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। বোরো মৌসুমে কোথাও কোনো পানির সমস্যা হয়নি। তিস্তা নদী এলাকার সমস্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিস্তা নদীর প্রায় ৩০ কিলোমিটার ডানতীর বাঁধ নষ্ট হয়ে গেছে, এসব বাঁধ মেরামতের জন্য ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।