ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বেদখল হচ্ছে মুন্সীগঞ্জে মিনারা মসজিদের সম্পত্তি

বেদখল হচ্ছে মুন্সীগঞ্জে মিনারা মসজিদের সম্পত্তি

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার আধারা ইউনিয়নের সৈয়দপুরের মিনা বাজারে ঐতিহ্যবাহী মিনারা মসজিদটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। পাশাপশি মসজিদটির সম্পত্তি বেদখল হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়- ৮০ সালে নির্মাণ হয় মিনারা মসজিদটি। এই মসজিদটির রয়েছে সুবিশাল মিনার। এই মিনার দেখে স্থানীয় মানুষ মিনা বাজারে আসে নামাজের সময়ে মসজিদে এসে নামাজ আদায় করে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। কিন্তু একটি মহল মিনারা মসজিদ ভেঙে নতুন করে নির্মাণের উদ্যোগ নিয়ে সম্পত্তি দখলের পাঁয়তারা করছে। মসজিদের সম্পত্তি রক্ষায় সৈয়দপুরের স্থানীয় বাসিন্দা মো. মজিবুর রহমান মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ, জিডি করেছে। এছাড়া পুলিশ সুপার বরাবর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। থানার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আধারা ইউনিয়নের সৈয়দপুরের মৃত হাজী লোকমান খাঁনের পুত্র মো. ইসমাইল খান, মো. শরিফ খান, মৃত আকরাম মৃধার পুত্র আনিছ মৃধা, মৃত নয়ন দেওয়ানের পুত্র আব্দুর রহমান, পনচু দেওয়ান, মিরু ভূইয়ার পুত্র মহসিন, মৃত মোতালেব দেওয়ানের পুত্র খায়রুদ্দিন দেওয়ানরা মিলে একই গ্রামের বাসিন্দা মৃত হাজী আব্দুল মজিদের স্ত্রী খালেদা বেগম ও তার সন্তান মো. ইয়াছিন, ইয়াকুব, আমেনা বেগম, আমিরা বেগম তারা সবাই ক্রয় সূত্রে মালিকানা সম্পত্তিতে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ ও বনজ গাছ রোপণ করে ৩৫ বছর ধরে ভোগ দখল করে আসছে; কিন্তু সম্পত্তির মালিক খালেদা বেগম ও তার সন্তানরা সৌদি থাকায় এই সম্পত্তি দেখভালের দায়িত্ব পান তাদের আত্মীয় মো. মজিবুর রহমান কিন্তু ইসমাইল খান ও তার সহযোগীরা সুকৌশলে মসজিদের পাশে পুকুর খনন করে বিভিন্ন প্রকারের মাছ চাষ করে ভোগ দখল করে আসছে মজিবর তাদের বাধা দিলে তারা গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। ওই বিষয়ে জের ধরে গত ২৯ এপ্রিল বিকাল ৫টায় মিনা বাজারের পশ্চিম পাশে পুকুরের মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার সময় মজিবুর বাধা প্রদান করলে আনিছ মৃধা ও আব্দুর রহমান গালমন্দ করে বলে এই মসজিদের জায়গায় আসবি না বলে হুমকি দেয়। এঘটনায় তাদের অত্যাচার ও হুমকি থেকে রক্ষা পেতে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় একটি অভিযোগ দেয়। এছাড়া সদর থানায় জিডি ও পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শফি খার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ঐতিহ্যবাহী এই মিনারা মসজিদটি হচ্ছে ওয়াকফা সম্পত্তি। এ সম্পত্তির আমরা দখল করছি না, আমি এ মসজিদটির একজন দাতা সদস্য, মসজিদটির বয়স প্রায় ৪৪ বছর। ভবনটি পুরাতন হওয়ায় তা ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সব প্রথমে আমরা মসজিদটির মিনারা ভাঙার কাজে হাত দিয়েছি। পুকুরের অধিকাংশ জায়গা হচ্ছে, মৃত হাজ্বী আব্দুল মজিদের তিনি সম্পর্কে আমার তালই আমরা পুকুরটি কিছু অংশ কেটে অজুখানা করছি। অবশিষ্ট অংশে মাছ চাষ করা হচ্ছে, এখান থেকে যে অর্থ আসে তা দিয়ে মসজিদের কাজে ব্যয় করা হয়। গাছগাছালি কাটার ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে তিনি মন্তব্য করেনি। তিনি আরো বলেন, ২০০৭ সালের দিকে মৃত হাজী আব্দুল মজিদের স্ত্রী ও সন্তানরা বিদেশ থাকায় সম্পত্তি দেখা শোনার দায়িত্ব পান মজিবর রহমান । এবিষয়ে মৃত হাজী আব্দুল মজিদের স্ত্রী সৌদি প্রভাসী খালেদা বলেন, আমরা বিদেশ থাকায় দেশে কম আসা হয় বিধায় সুকৌশলে সৈয়দপুরের মিনা বাজারে মসজিদ, পুকুর ও তার আশপাশে আমাদের যে জমি রয়েছে, সেগুলো দখলের পাঁয়তারা করছে ইসমাইল ও তার সহযোগীরা। মিনা বাজারে আমাদের বিভিন্ন জাতের গাছের বাগানও রয়েছে। এগুলো দেখা শোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মো. মজিবুর রহমানকে। এখন সৈয়দুপরের ইসমাইল খা ও তার সহযোগীরা মিলে আমাদের মসজিদটি আমাদের না জানিয়ে ভেঙে ফেলছে এমনকি আমাদের পুকুরটি দখলে নিতে পাঁয়তারা করছে। আমাদের সমাজের ঐতিহ্যবাহী মিনারা মসজিদটির মিনার ভেঙে ফেলেছে যা শুনে আমরা আশ্চর্য হয়েছি। এই মসজিদ ও মসজিদের পুকুর ও বাগানের গাছপালা রক্ষায় আমরা আইনের আশ্রয় নিয়েছি। সম্পত্তি রক্ষায় আমরা প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা কামনা করছি। এ বিষয়ে মো. মজিবুর রহমান বলেন মৃত হাজী আব্দুল মজিদের স্ত্রী সৌদি প্রভাসী খালেদা বেগম আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে, তাদের সম্পত্তি দেখা শোনার দায়িত্ব। সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে মিনার মসজিদ এর পুকুর ও তার আশপাশে গাছের বাগান এই মিনারা মসজিদটি হাজী আব্দুল মজিদের জায়গায় পড়েছে মসজিদের জায়গাটি ওয়াকফা সম্পত্তি। বর্তমানে মসজিদটির মিনার ও পুকুরের জায়গা, গাছপালা দখলে জন্য মরিয়া হয়ে পড়েছে ইসমাইল ও তার সহযোগীরা। হাজী আব্দুল মজিদ হচ্ছে মিনারা মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা। আমি বাধা দিতে গেলে আমার উপর শুরু হয়েছে অত্যাচার দিচ্ছে হুমকি। আমি নিজেকে ও সম্পত্তি রক্ষায় পুলিশ প্রশাসনের আশ্রয় নিয়েছি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আসলে মিনারা মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন আব্দুল মজিদ। তিনি ওয়াকফা করেছে জায়গাটি। এখন পুকুর ও বাগান মসজিদের সম্পত্তি কি না বা এসব সম্পত্তি ওয়াকফা করা হয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখতে হবে। আনিছ মৃধা ও শফি খা বিএনপির রাজনৈতির সঙ্গে জড়িত তারা এলাকায় নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ রয়েছে। তারা এখন প্রবাসীর জমি দখলের পাঁয়তারা করছে যা ঠিক না। এবিষয়ে সদর থানার এসআই নাজমুল বলেন আমি অভিযোগটির তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়েছি ঐতিহ্যবাসী মসজিদটি ভাঙ্গার কাজটি আপাততদ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত