সাতক্ষীরার বাজারে উঠতে শুরু করেছে সুস্বাদু দেশি জাতের বিভিন্ন পাকা আম। মধুমাস জ্যৈষ্ঠ আসার আগেই এসব বাজারে উঠছে সুস্বাদু বিষমুক্ত গোবিন্দভোগ, গোলাপখাস, সরিখাস, গোপালভোগ, বোম্বাইসহ দেশি জাতের পাকা আম। ভৌগলিক অবস্থানের কারণে প্রতি বছর আগেভাগেই সাতক্ষীরার আম বাজারে আসে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা আমের জন্য সাতক্ষীরায় আসতে শুরু করেছেন। বর্তমানে শহরের সুলতানপুর বড় বাজারে আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের পদচারণায় পা রাখার জায়গা নেই। আম কেনাবেচায় যেন চাঙ্গা হয়ে উঠছে গ্রামীণ আর্থনীতি। এদিকে, মান হিসেবে ও শ্রেণিভেদে প্রতি মণ এই আম বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন ফলন কম হওয়ায় গত বছরের তুলনায় এবার দাম দ্বিগুণ। সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, জেলায় এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ১ হাজার ২৩৫ হেক্টর, কলারোয়ায় ৬৫৮ হেক্টর, তালায় ৭১৫ হেক্টর, দেবহাটায় ৩৮০ হেক্টর, কালিগঞ্জে ৮২৫ হেক্টর, আশাশুনিতে ১৪৫ হেক্টর ও শ্যামনগরের ১৬০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। জেলায় সরকারি তালিকাভুক্ত ৫ হাজার ২৯৯টি আমবাগান ও ১৩ হাজার ১০০ চাষি রয়েছেন। সবমিলে ৪ হাজার ১১৮ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। সাতক্ষীরা সুলতানপুর বড় বাজার কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রওশন আলী বলেন, ভৌগলিক অবস্থানের কারণে সাতক্ষীরার আম প্রতি বছর আগেভাগেই বাজারে আসে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা আমের জন্য সাতক্ষীরায় আসতে শুরু করেছেন। শ্রেণিভেদে ও মান হিসেবে প্রতি মণ আম বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকায়। তিনি আরো বলেন, প্রশাসনের নির্দেশনায় বৃহস্পতিবার (৯ মে) থেকে জেলাব্যাপী আম ভাঙা শুরু হয়েছে। আমে কেউ যেন কোনো ধরনের কেমিক্যাল মেশাতে না পারে সেটিও তদারকি করা হচ্ছে। গত শনিবার থেকে গোবিন্দভোগ এবং ২১ মে হিমসাগর আম বাজারে আসবে। অপরদিকে, অপরিপক্ব আম বাজারজাতকরণ প্রতিরোধে আম ক্যালেন্ডার ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। সে অনুযায়ী, ২২ মে হিমসাগর, ২৯ মে ল্যাংড়া এবং ১০ জুন থেকে আম্রপালি আম সংগ্রহ ও বাজারজাত করা যাবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সাতক্ষীরার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় কয়েকটি জাতের আম দিয়ে ৯ তারিখ থেকে সাতক্ষীরায় আম সংগ্রহ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ২২ মে হিমসাগর, ২৯ মে ল্যাংড়া ও ১০ জুন আম্রপালি আম সংগ্রহ হবে। মনে রাখতে হবে, গাছের সব আম একসঙ্গে পাকে না। সুতরাং আমের রং আসার আগে না পাড়ার অনুরোধ জানান তিনি।