ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দৃষ্টিনন্দন তরমুজের নাম ‘স্মার্ট বয়’

দৃষ্টিনন্দন তরমুজের নাম ‘স্মার্ট বয়’

তপ্ত দুপুরে সূর্যের আলো তরমুজ খেতে পড়ে চিকচিক করছে। তরমুজের দিকে তাকাতেই চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে। খেতজুড়ে বাঁশের তৈরি মাচা। সেইসব মাচায় ঝুলে আছে ‘স্মার্ট বয়’ জাতের তরমুজ। একটি-দুটি নয়, শত শত তরমুজ। ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নের কান্দি গ্রামের জসিম উদ্দিন খান মুক্তার তরমুজ খেতের দৃশ্য এখন এমনই। তিনি তার পাশের গ্রাম প্রসাদপুরে নিজ জমিতে কৃষি বিভাগের পরামর্শে প্রথমবার তরমুজ চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তরমুজ দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি শরীরের পুষ্টি যোগাতেও সাহায্য করে। গরমের সময় প্রায় সবাই তরমুজ খেয়ে থাকেন। এছাড়াও তরমুজ শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় কার্যকর ওষুধ হিসেবে কাজ করে, কিডনি সুস্থ রাখতে সহায়তা করে, হার্টকে স্বাস্থ্যকর রাখাসহ তরমুজের রয়েছে অনেক গুণ। বহু গুণের অধিকারী এ তরমুজ চাষ করে সফল হয়েছেন জসিম উদ্দিন খান মুক্তা। এসব তরমুজের ভেতরে টকটকে লাল। স্বাদে মিষ্টি ও সুস্বাদু। প্রসাদপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সরাসরি খেত থেকে তরমুজ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন কয়েকজন। একজন গাছ থেকে তরমুজ ছিড়ে দিচ্ছেন তাদের। খেতের মাচায় ঝুলছে তরমুজ। সবুজ পাতার মধ্যে যেদিকে চোখ গেছে, শুধু তরমুজ ঝুলতে দেখা গেছে। সেখানেই কথা হয় তরমুজ চাষি জসিম উদ্দিন খান মুক্তার সঙ্গে। তিনি জানান, ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে বগুড়া থেকে ৮০০ বীজ সংগ্রহ করেন। এরপর সেখানে বেড তৈরি করে উপরে বিছিয়ে দিয়েছেন মালচিং পেপার। এর ফাঁকে উৎপাদন করেছেন চারা। এরপর গফরগাঁও কৃষি বিভাগের পরামর্শে ও সার্বিক সহযোগিতায় তিনি চারা রোপণ করেন। এ পর্যন্ত জমি প্রস্তত, সার, বীজ, মাচা, সুতা ও জালবাবদ তার খরচ হয়েছে অন্তত ৩০ হাজার টাকা। উপজেলা কৃষি অফিসার রকিব আল রানা ও উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার রুহুল আমিনের পরামর্শ নিয়ে সব কাজ করেছেন তিনি। এতে তার উৎপাদন খরচ বেশ সাশ্রয় হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তিনি তরমুজ বিক্রি করা শুরু করতে পারবেন বলে জানান। এছাড়াও তিনি জানান, খরচ বাদ দিয়ে অন্তত ৭০ হাজার টাকা লাভ হবে তার। এবারের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সামনের দিনে দ্বিগুণ জমিতে তরমুজ চাষের পরিকল্পনা রয়েছে তার।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাকিব আল রানা বলেন, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় এ বছর উপজেলায় প্রায় ১ একর জমিতে তরমুজ আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে কৃষক জসিম উদ্দিনকে তরমুজ প্রদর্শনী দেয়া হয়। তিনি ৩৩ শতাংশ জমিতে মাচায় তরমুজের আবাদ করেছেন। এখন তার ক্ষেতের তরমুজগুলো ৫ থেকে ৮ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়েছে। তরমুজের ভেতরের অংশে চমৎকার লাল রং ধারন করেছে। স্মার্ট বয় জাতের এ তরমুজ গফরগাঁও উপজেলায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। বর্তমানে জসিম উদ্দিনের খেতে তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা তরমুজের ভালো ফলন দেখে ব্যাপক আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তারা সামনের বছর এ জাতীয় তরমুজের আবাদ করবেন। উপজেলায় মাঠ পর্যায়ে কর্মরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দ কাজ করে যাচ্ছেন। কীভাবে তরমুজের আবাদ উপজেলায় বেশি করে বৃদ্ধি করা যায় এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিস সব সময় প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিবে ও কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত