ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ৬নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা বাজার থেকে শিশুতলা বাজার পর্যন্ত ৪ হাজার ৪৮৫ মিটার পাকা রাস্তা নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। রাস্তাটির দুই পাশে ২ মিটার বর্ধিত করার অংশে ম্যাকাডাম করা হয়েছে নিম্নমানের ইটের খোয়া দিয়ে। অভিযোগ রয়েছে, রাস্তাটির দুইপাশের বর্ধিত অংশের বেড কাটার পর সাববেইজ করতে বালুর সঙ্গে যে পরিমাণে খোয়া ব্যবহার করার কথা, সেটিও করা হয়নি নিয়ম মেনে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সংশ্লিষ্টরা জানান, গ্রামীণ সড়ক মেরামত ও সংরক্ষণ প্রকল্পের অধীনে বালিয়াডাঙ্গা টু শিশুতলা রাস্তা মেরামত সংরক্ষণের জন্য টেন্ডার আহ্বান করে কালীগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি। টেন্ডারে ৩ কোটি ৭২ লাখ ৪৯ হাজার ৪৬৫ টাকা চুক্তিমূল্যে কাজ পায় বরেন্দ্র কনস্ট্রাকশন লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে এলজিইডির কার্যাদেশ অনুযায়ী ২৭ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে রাস্তাটির কাজ শুরু হয়। এ রাস্তাটির মেরামত ও সংরক্ষণ কাজের সময়সীমা রয়েছে ২৬ মে ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে এগিয়ে আসলোও রাস্তাটির মেরামত সংরক্ষণ কাজ চলছে অত্যন্ত ধীর গতিতে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কয়েক মাস ধরে রাস্তার কাজ হলেও তা এখনো সম্পন্ন হয়নি। এতে আমাদের ভোগান্তি ও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ ছাড়া রাস্তাটির সাববেইজ করার সময় ইটের খোয়া ও বালু সমান সমান ব্যবহার করার কথা থাকলেও সেখানে চারভাগের একভাগ খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। এরপর রাস্তায় যে খোয়া দেওয়া হয়েছে, সেগুলো দুই ও তিন নম্বর ইটের। সরেজমিন, রাস্তার কাজ পরিদর্শনে যেয়ে পথচারী ইসলাম আলী শেখ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, রাস্তাটির দু’পাশে দীর্ঘদিনের পুরাতন ইট ছিল। সেই পুরাতন ইট তুলে খোয়া বানিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া ভাটা থেকেও দুই ও তিন নম্বর ইটের আধলা এনে খোয়া বানিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা মানা করা সত্ত্বেও তারা ওই ইটের খোয়া ব্যবহার করেছে। ঠিকাদার কাজী মাহবুবুর রহমান রুলু বলেন, স্থানীয়রা যে অভিযোগ করছে তা ঠিক নয়। আবহাওয়ার কারণে কাজ একটু বিলম্ব হয়েছিল। বর্তমানে রাস্তাটিতে কাজ চলছে। ওই রাস্তায় কোন দুই নম্বর ইট পড়েনি। এলজিইডির তদারকি কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: নজরুল ইসলাম বলেন, কাজের ফিনিশিং দেওয়ার জন্য কিছু ইট নিম্নমানের দেওয়া লাগছে। এরপরও আপনি যখন বললেন, তখন আমি ঠিকাদারকে বলছি নিম্নমানের ইট না ফেলতে। এলজিইডির কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো: আবুল কালাম আজাদ বলেন, রাস্তার কাজের অনিয়মের ব্যাপারে আমার জানা নেই। আমি আছি ওই রাস্তায় পরিদর্শনে যাব। অনিয়মের কোনো সত্যতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।