কেশবপুরে হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে অপরিপক্ব লিচু

প্রকাশ : ১৬ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মশিয়ার রহমান, কেশবপুর (যশোর)

যশোরের কেশবপুরে মৌসুম শুরুর আগেই মধু মাসের রসালো ফল অপরিপক্ব লিচু হাট-বাজারে উঠতে শুরু করেছে। তীব্র দাবদাহে লিচু ঝরে যাচ্ছে। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়ে পরিপক্ব হহওয়ার আগেই লিচু বিক্রি করে দিচ্ছে বাগান মালিকরা। ফলে লিচুর আসল স্বাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ভোক্তারা। এদিকে এসব অপরিপক্ব লিচু না খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। তবে লিচু অপরিপক্ব হলেও বাজারে বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। কৃষি অফিসের তথ্য মতে, উপজেলায় ৫০ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে। শুরুতে ৬০ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছিল। এসব বাগানে, আঁটি লিচু, মোজাফর বোম্বাই, চিলি বোম্বাই, আতা বোম্বাই ও চায়না-থ্রি জাতের লিচু উৎপাদন হয়ে থাকে। লাভজনক হওয়ায় এ জেলায় লিচুর আবাদ বাড়ছে। এখানকার লিচু রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। চলতি মৌসুমে একটু দেরি করেই গাছে মুকুল এসেছিল তাও অনেক কম। উপরন্ত প্রচণ্ড দাবদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে গাছ থেকে ঝরে গেছে অনেক লিচু। এতে লোকসান গুনতে হচ্ছে চাষিদের। কৃষকরা বলছেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণেই পরিপক্ব হবার আগেই গাছ থেকে লিচু পেড়ে ফেলতে হচ্ছে। কারণ গাছ থেকে লিচু ঝরে পড়ছে। তবে লিচুর আবাদে চাষিরা লোকসান গুনলেও লাভবান হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। পরিপক্ব হবার আগেই লিচু বাজারে আসায় লিচুর স্বাদও কমছে বলে জানান ভোক্তারা। বাজারে লিচু কিনতে আসা আজমাইন হোসেন জানান, বাজারে নতুন ফল এসেছে। তাই বাড়ির ছেলে-মেয়েদের জন্য কিনেছেন। যদিও একটু স্বাদ কম। আরো কিছুদিন গাছে থাকলে লিচু পরিপূর্ণ পুষ্ট হতো স্বাদও পাওয়া যেত। লিচু চাষি আব্দুল আলিম জানান, তার বাগানে শতাধিক লিচু গাছ থাকলেও ফল এসেছে অর্ধেক গাছে। আবার গত বছরের তুলনায় সেই গাছগুলোতে লিচু দাঁড়িয়েছে কম। আর রোদের তাপে গাছ থেকে লিচু একাই ঝরে পড়ছে। কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মো. আলমগীর হোসেন জানান, হাইপোগ্লাইসিন এ সাধারণত কাঁচা বা আধা পাকা অর্থাৎ পাকা নয়, এমন লিচুতে পাওয়া যায়। এটি একটি অ্যামিনো অ্যাসিড, যা মারাত্মক বমি বমি ভাব সৃষ্টি করে। অন্যদিকে মিথাইলিন-সাইক্লো-প্রোপাইল-গ্নাইসিন উপাদানটি গ্রহণের ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ দ্রুত কমে যায়। এর কারণে বমি, অচেতন এবং দুর্বল হয়ে পড়ে রোগী। কাঁচা বা আধা পাকা লিচু খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। এ বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে সচেতনতাও বাড়াতে হবে। কেশবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার জানান, লিচুর গুণগত মান ধরে রাখার জন্য আরও কয়েকদিন পর লিচু বাজারজাত করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে কৃষকদের। তবে, শিলাবৃষ্টি এবং ঝড় ছাড়া বর্তমানে যে আবহাওয়া বিরাজ করছে তা লিচুর জন্য উপযোগী। অপরিপক্ব লিচু খেলে ভোক্তরা লিচুর পুষ্টিমান পাবে না। লিচুর স্বাদ থেকেও বঞ্চিত হবে। এমনকি লিচুর যে ওজন হওয়ার কথা তাও হবে না।