ময়মনসিংহে বিদ্যুৎ কর্মচারীদের ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ

প্রকাশ : ১৭ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মোজাম্মেল খোকন, ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহ জেলার বর্তমান সার্বিক বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় সভায় সীমাহীন ভোগান্তি ও হয়রানির অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা। এ সময় উপস্থিত গ্রাহকসহ সামাজিক ও নাগরিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ প্রিপেইড মিটারে হয়রানি ও বিদ্যুৎ কর্মচারীদের ঘুষ বাণিজ্যের কঠোর সমালোচনা করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গত বুধবার বিকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে টানা দুই ঘণ্টাব্যাপী বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় অংশীজনরা এই অভিযোগ করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী। এ সময় প্রিপেইড মিটার নিয়ে গ্রাহকদের হয়রানি ও অসন্তুষ্টি তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন- ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অমিত রায়, জনউদ্যোগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম চুন্নু, সিপিবির সভাপতি অ্যাডভোকেট এমদাদুল হক মিল্লাত, নাগরিক আন্দোলনের নেতা অ্যাডভোকেট শিব্বির আহমেদ লিটন, সাংবাদিক নিয়ামুল কবীর সজল, নারীনেত্রী সৈয়দা সেলিমা আজাদ, সুছন সম্পাদক আলী ইউসুফ, রাইস মিল সমিতির সভাপতি লিলুর রহমান, শিক্ষক আনোয়ারুল কবীর প্রমুখ। সভায় বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, প্রিপেইড মিটার গ্রাহকদের ভোগান্তি বাড়িয়ে তুলেছে। স্মার্ট মিটারের নামে হয়রানি সৃষ্টি করা হয়েছে। এতে টাকা লোড করতে গ্রাহককে ২০ থেকে ৩২০টি ডিজিট চাপতে হয়। একাধিকবার ভুল হলে লক হয়ে যায় মিটার। একই সঙ্গে টাকা লোড করার সঙ্গে সঙ্গে কেটে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত বিল। এছাড়াও বিদ্যুৎ জটিলতার কোনো কাজে কর্মচারীদের ডেকে নিলেও টাকা না দিলে তারা কাজ করে না। এটা এখন প্রকাশ্য ঘুষে পরিণত হয়েছে। এই অবস্থায় প্রিপেইড মিটার সহজীকরণ করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ও নাগরিক নেতৃবৃন্দ। পরে গ্রাহকের নানা অভিযোগের জবাব দেন পিডিবির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জসীম উদ্দিন, নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ-২) ইঞ্জিনিয়ার ইন্দ্রজিত দেবনাথ ও নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ বিতরণ ও বিক্রয় বিভাগ-২) ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত রায়।

তারা বলেন, প্রিপেইড মিটার জনগণের কল্যাণে স্থাপন করা হচ্ছে। এটি সরকারের প্রকল্প। প্রিপেইড মিটারে টাকা লোড দিতে বাটন চাপাচাপি নিয়ে জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে বলে আমরা স্বীকার করছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহলে উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও লোড কম-বেশি নিয়ে কর্মকর্তারা জানান, গরমকালে গ্রাহকের লোড বেশি হলে (৩ কিলোওয়াট থেকে ৮ কিলোওয়াট) আবেদনের মাধ্যমে শীত মৌসুমে লোড কমানোর সুযোগ রয়েছে। প্রিপেইড মিটারে একজন গ্রাহক যখন যেমন লোড চাইবেন, তখন তাই পাবেন। আর সে অনুযায়ী প্রতি কিলোওয়াটে ৪২ টাকা কেটে যাবে। এছাড়াও প্রতিমাসে মিটার ভাড়া ৪০ টাকা এবং ১০% ভ্যাট কেটে নেয়ার পাশাপাশি গ্রাহক শ্রেণি অনুযায়ী বিদ্যুতের বিল কেটে নেয়া হবে। প্রসঙ্গত, ময়মনসিংহ প্রি-পেমেন্ট মিটারিং প্রজেক্ট ফর ডিস্ট্রিবিউশনের আওতায় ময়মনসিংহ এক লাখ ১৮ হাজার ৫৪০টি পোস্ট-পেইড মিটারকে প্রিপেইড মিটারে রূপান্তর প্রক্রিয়ায় এই হয়রানি ও ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে।