মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে ভাঁট ফল

প্রকাশ : ১৮ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

কিছুদিন আগেও প্রকৃতিতে ছিল মন জুড়ানো ভাঁট ফুলের আধিপত্য। এ ফুলের নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়েছেন ফুলপ্রেমীসহ নানা বয়সি মানুষ। তবে ফুলের মতো ভাঁট ফলের সৌন্দর্যও উপভোগ করছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। ভাঁট ফুলের সৌন্দর্যের চেয়ে কোনো অংশে কম নয় ভাঁট ফলের সৌন্দর্য। ভাঁট ফলের সম্মোহনী এ সৌন্দর্য কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় যে কাউকে সহজেই আকৃষ্ট করছে। জানা গেছে, ভাঁট বা বনজুঁই একটি শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট ঝোপজাতীয় গুল্মশ্রেণির বহুবর্ষজীবী সপুষ্পক উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম ক্লেরোডেনড্রাম ভিসকোসাম। এটি অতিপরিচিত একটি বুনো উদ্ভিদ। এর ফুল সাদার মধ্যে হালকা বেগুনি মিশ্রিত স্নিগ্ধ সুন্দর। ভাঁটফুল ৫টি পাপড়ি নিয়ে ফোটে থোকায় থোকায়। এ ফুলের গন্ধ রাতে তীব্র হয়ে ওঠে। এর আদি নিবাস ভারতীয় উপমহাদেশে। এটি কোনো পরিচর্যা ছাড়াই অনাদর ও অবহেলায় পথের ধারে, জলাশয়ের পাড়ে ও বাড়ির আশপাশে জন্মে ও বেড়ে ওঠে। প্রকৃতিতে শীত শেষেই ফুটতে শুরু করে ভাঁটফুল। ভাঁটফুল মুগ্ধতা ছড়ানোর শেষে ফুল ঝরে গিয়ে ফল আসে। চারপাশে ৫টা লাল রঙের পাপড়ির মাঝখানে রয়েছে কালো রঙের ফল। এ ফলটিও দেখতে ফুলের মতোই সুন্দর। যে কেউ এ ফলকে ফুল ভেবে ভুল করে। ফল দেখলে মনে হয় যেন ফুল ফুটে আছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, গোমতী নদীর দুই পাড়ের বিভিন্ন জায়গায়, বনেবাদাড়ে, উপজেলার বিভিন্ন মেঠোপথে ও ঝোপঝাড়ে লাল হয়ে ধরে আছে ভাঁটফল। প্রকৃতিকে আরো রঙিন করে দিতে নিজেদের সৌন্দর্য মেলে ধরতে থোকায় থোকায় ধরে আছে। ভাঁট ফুলের সৌন্দর্যে প্রকৃতি যেমন সেজে উঠেছিল, তেমনি আরো সুন্দর হয়ে উঠেছে ভাট ফলের সৌন্দর্যে। ভাঁট শুধু সৌন্দর্যই বিলায় না, এর রয়েছে ঔষধি গুণ। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রমতে, ভাঁট গাছের সবুজ পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার। এতে মানবদেহের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফাইবার থাকার কারণে এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে সহায়তা করে। এর পাতায় অ্যান্টি-ডায়াবেটিক উপাদান আছে। এতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। পাতায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লোমেটরি উপাদান আছে বলে এটি শ্বাসযন্ত্রের রোগ নিরাময়ে সহায়ক। মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভাঁট গাছের পাতার জুড়ি নেই। হজমশক্তি বৃদ্ধিতেও ভাঁট গাছের পাতা ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া পাতা, বীজ ও ফল আদিকাল থেকেই আরও নানা রোগে ভেষজ ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। স্থানীয় বাসিন্দা নওশিন ইশতিয়াক বলেন, ভাঁটফুল ফুরিয়ে গেলে ভাঁট গাছের ফুলের স্থানে ফুলের মতো ফল ধরে। এ ফলটি দেখলে যে কেউ এটাকে ফুল মনে করবে।