দেবহাটায় চলছে প্রার্থীদের জোর প্রচারণা

প্রকাশ : ১৯ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আরকে বাপ্পা, দেবহাটা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি

সাতক্ষীরা জেলার দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তজুড়ে দেবহাটা উপজেলার অবস্থান। এ উপজেলার পাশ দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমানা নির্দেশিত ইছামতি নদী প্রবাহিত। জেলার মধ্যে এলাকাটি একটি মৎস্য সমৃদ্ধ অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। এখানে প্রচুর পরিমাণে বাগদা চিংড়ি উৎপাদন হয়। এই এলাকাকে ‘বাংলাদেশের কুয়েত’ বলা হয়। উপজেলার মোট আয়তন ১৭৬.৩৩ বর্গ কিলোমিটার যা ৬৮ বর্গমাইলের সমান। জনসংখ্যা ১, ৫১, ৭১৭ জন। প্রতি কিলোমিটারে জনবসতি গড়ে ৬৯০ জন। ১৯১৯ সালে দেবহাটা থানা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালে ২ জুলাই দেবহাটা উপজেলার মর্যাদা লাভ করে।

এছাড়া ১৬৬৮ সালে দেবহাটাতে গড়ে উঠেছিল একটি পৌরসভা, যেটি ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান সরকারের সময়ে বিলুপ্ত হয়। পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে দেবহাটা উপজেলা গঠিত। ইউনিয়নগুলো হলো কুলিয়া, পারুলিয়া, সখীপুর, নওয়াপাড়া ও সদর দেবহাটা। উপজেলার মোট গ্রামের সংখ্যা ১১৬টি ও মৌজার সংখ্যা ৫৮টি। এই উপজেলায় আগামী ২১ মে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চলছে জোর প্রচার প্রচারণা। প্রার্থীরা ছুটছেন জনগণের দ্বারে দ্বারে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি ও উন্নয়নের বার্তা নিয়ে। এই উপজেলার মোট ভোটার রয়েছেন ১ লাখ ১১ হাজার ৫২৭ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫৬ হাজার ৫৫ জন ও মহিলা ভোটার রয়েছেন ৫৫ হাজার ৪৭১ জন। ১ জন রয়েছেন হিজড়া সম্প্রদায়ের ভোটার। এই ভোটাররাই আগামী ২১ মে নির্বাচিত করবেন আগামী ৫ বছরের জন্য তাদের প্রতিনিধি কে হবেন। ভোটকে কেন্দ্র করে হাটবাজার, রাস্তাঘাট, চায়ের দোকানসহ পাড়ামহল্লায় সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এবারের নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে দুইজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুইজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান পদে মুজিবর রহমান মোটরসাইকেল, অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা চিংড়ি মাছ, রফিকুল ইসলাম আনারস, আল ফেরদাউস আলফা হেলিকপ্টার ও আবু রাহান তিতু ঘোড়া প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাবিবুর রহমান সবুজ তালা ও বিজয় ঘোষ টিউবওয়েল এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জিএম স্পর্শ কলসি ও আমেনা রহমান ফুটবল প্রতিকে লড়ছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মুজিবর রহমান জানান, তিনি বিগত সময়ে দায়িত্বে থাকাকালীন উপজেলার প্রতিটি সেক্টরে উন্নয়নের ছোঁয়া দিয়েছেন। তার সময়ে ১৩০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে, তাই ভোটাররা তাকেই আবার নির্বাচিত করবেন। অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা বলেন, তিনি ২০০৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দেবহাটাকে একটি আধুনিক ও উন্নয়নের রোল মডেলে নিয়ে যেতে কাজ করেছেন। দেবহাটা রূপসী ম্যানগ্রোভ তার প্রচেষ্টায় তৈরি করেছেন, যেখান থেকে এখন অনেক যুবকের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে এবং সরকার প্রচুর রাজস্ব আয় পাচ্ছে। তিনিও ভোটাররা তাকে নির্বাচিত করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও নির্বাচনে প্রার্থী হাবিবুর রহমান সবুজ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জি.এম স্পর্শ আবারো নির্বাচত হবেন ও ভোটাররা তাদেও মূল্যবান ভোট দেবেন বলে জানান।

এ বিষয়ে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান, আগামী নির্বাচন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও ভোটারদের নিশ্চয়তা নিশ্চিতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মেনে সকল কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে জানান। প্রতিটি ইউনিয়নে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে টহল টিম প্রতিনিয়ত কাজ করছে বলে ইউএনও জানান।