মধুখালীতে বাঁশ শিল্পের দুর্দিন

ভালো নেই কারিগররা

প্রকাশ : ২০ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মধুখালী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

বাঁশের তৈরি বিভিন্ন উপকরণকে জীবিকার প্রধান বাহক হিসেবে আঁকড়ে রেখেছে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার নলিয়া পরিবারের গুটিকয়েক মানুষ। এই বাঁশই বর্তমানে তাদের জীবিকার প্রধান বাহক। কিন্তু দিন দিন বাঁশের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় ভালো নেই এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত কারিগররা। পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে তাদের বেছে নিতে হচ্ছে অন্য পেশা। মধুখালী উপজেলা থেকে ক্রমান্বয়ে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বাশঁশিল্প। বাঁশের তৈরি পণ্যের কদর আর তেমন নেই বললেই চলে। ঐতিহ্য হারাতে বসেছে এই শিল্পটির। গ্রামীণ জনপদের মানুষ গৃহস্থালি, কৃষি ও ব্যবসা ক্ষেত্রে বাঁশের তৈরি সরঞ্জামাদি ব্যবহার করলেও, এখন বিলুপ্তির পথে এ শিল্পটি। তাছাড়াও দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়েছে এ শিল্পের কাঁচামাল বাঁশ। এখন আর আগের মতো বাড়ির আশপাশে বাঁশের ঝোঁপ রাখছে না কেউ, সেগুলো কেটে বিভিন্ন চাষাবাদসহ দালান তৈরি করছে মানুষ, তাই কাঁচামাল আর আগের মতো সহজেই পাওয়া যায় না। বাজারগুলো দখল করেছে প্লাস্টিক, এলুমিনিয়াম, স্টিলসহ বিভিন্ন দ্রব্য। তাছাড়াও প্লাস্টিক ও অন্যান্য দ্রব্যের পণ্য টেকসই ও স্বল্পমূল্যে পাওয়ায় সাধারণ মানুষের চোখ এখন সেগুলোর ওপর। জানা যায়, এক সময় দেশের বিস্তীর্র্ণ জনপদে বাঁশ দিয়ে তৈরি হতো গৃহস্থালি ও সৌখিন পণ্যসামগ্রী। বাড়ির পাশের ঝাড় থেকে তরতাজা বাঁশ কেটে গৃহিণীরা তৈরি করতেন হরেক রকমের পণ্য। এছাড়াও বিভিন্ন পণ্য তৈরি করতে বাঁশ ক্রয় করে আনতে হয় চট্টগ্রাম থেকে। তৈরিকৃত পণ্য নিজেদের ব্যবহারের পাশাপাশি, বাজারে বিক্রি করে চলত তাদের জীবনযাপন। তবে এখনও গ্রামীণ উৎসব ও মেলাগুলোতে বাঁশের তৈরি কুলা, চালুন, খাঁচা, মাচাং, মই, চাটাই, ঢোল, গোলা, ওড়া, বাউনি, ঝুঁড়ি, ডুলা, মোড়া, মাছ ধরার চাঁই, মাথাল, বইপত্র রাখার র‌্যাকসহ বিভিন্ন পণ্য সাজিয়ে বসে আছেন এ পেশার কারিগররা। পৌর বাজারে বাঁশশিল্প বিক্রি করতে আসা মো. আখেরউদ্দীন বিশ্বাসের ছেলে মো. হান্নান বিশ্বাস বলেন, শিল্পের দুর্দিনে হাতে গোনা কিছু সংখ্যক পরিবার শিল্পটিকে আঁকড়ে ধরে আছেন। অনেকে এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় গেলেও পূর্বপুরুষের হাতেখড়ি এই পেশাকে কিছুতেই ছাড়তে পারেননি তারা। তাছাড়া বর্তমানে কাঁচামালের দাম হওয়ায় আমাদের তৈরিকৃত পণ্যেরও দাম বেশি নিতে হয়। প্রতিহাটে যা বিক্রি করি তা দিয়ে সংসার চালানো আমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।