ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অর্থের বিনিময়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ

অর্থের বিনিময়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ

মাদারীপুরের ডাসারে অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিমল মল্লিকের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যসহ স্থানীয়রা ব্যক্তিরা।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের চলবল উচ্চ বিদ্যালয়ে গত ১৭ মে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরীক্ষায় বিদ্যালয়টির সভাপতি তার পছন্দের প্রার্থীকে চাকরি দেওয়ার জন্য মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে লোক দেখানো লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষা নিয়ে জুয়েল রায় নামের এক প্রার্থীকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। অর্থ লেনদেনের বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়ভাবে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। এতে চাকরিপ্রার্থী ৯ জনের পরিবর্তে মাত্র চার প্রার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।

অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, চলবল উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির দুইবারের সভাপতি বিমল মল্লিক পার্শ্ববর্তী কোটালীপাড়া উপজেলার পীড়ারবাড়ি বাজারের এক ব্যবসায়ীর বাসায় বসে ৭ লাখ টাকার বিনিময়ে লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সভাপতি তার পছন্দের প্রার্থীকে পরীক্ষার আগের দিন রাতে সরবরাহ করেন। এতে ওই প্রার্থীকে পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করিয়ে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দিয়েছেন। এছাড়া গত ১৬ মে রাতে শশিকর কলেজের পশ্চিম পাশে নির্জন জায়গায় গোপনে উত্তম হালদারের উপস্থিতি সভাপতি বিমল মল্লিক প্রধান শিক্ষক পদের প্রার্থী দীপংকর হালদারের কাছে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু দীপংকর হালদার টাকার বিনিময়ে চাকরি গ্রহণের প্রস্তাব অস্বীকার করেন বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য অরুন মল্লিক বলেন, চলবল স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে ৯ প্রার্থী আবেদন করেছিলেন। নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের তথ্য ছড়িয়ে পড়লে পাঁচজন প্রার্থী নিয়োগ বোর্ডের উপরে আস্থা হারিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি। এতেই প্রমাণ হয়, এই নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে। এই নিয়োগের অনিয়মগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি রক্ষা করবে বলে দাবি করছি। প্রধান শিক্ষক পদের প্রার্থী দীপংকর হালদার বলেন, গত ১৬ মে রাতে শশিকর কলেজের পশ্চিম পাশে নির্জন জায়গায় গোপনে উত্তম হালদারের উপস্থিতি সভাপতি বিমল মল্লিক প্রধান শিক্ষক পদের প্রার্থী দীপংকর হালদারের কাছে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। আমি তা নাচক করে দিই। টাকার বিনিময়ে চাকরি নিতে আমি অস্বীকার করি। স্থানীয় আরেক বাসিন্দা রঞ্জিত মল্লিক বলেন, স্কুলের সভাপতি বেশ কিছু অনিয়ম আগেও করেছে। তিনি যখন প্রথমবার সভাপতি হন। ওই মেয়াদে সভাপতি তার আপন ভাইকে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে দপ্তরি পদে নিয়োগ দিয়েছেন। সভাপতি বিমল মল্লিক গাজীপুরের টঙ্গী সরকারি কলেজের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত অবস্থায় নিজ গ্রামের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে সক্রিয়ভাবে অপ-রাজনীতি করে যাচ্ছেন। এসব বিষয় তদন্ত-পূর্বক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে দাবি করছি। অভিযোগের বিষয়ে নবগ্রাম ইউনিয়নের চলবল উচ্চ বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিমল মল্লিক বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই বিষয়ে মাদারীপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ হাবিব উল্লাহ খান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ যদি লিখিত অভিযোগ আমার কাছে দেয়, তাহলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর সত্যতা পাওয়া গেলে নিয়োগ বাতিলের সুপারিশ করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত