ঢাকা ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ভূরুঙ্গামারী জোনাল অফিসের ভুতুড়ে বিল

বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, তবু বকেয়া পরিশোধের নোটিশ

বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, তবু বকেয়া পরিশোধের নোটিশ

হবির আলী পেশায় একজন দিনমজুর। বাড়ি কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পাইকেরছড়া গ্রামে। তার নামে নেই কোনো বৈদ্যুতিক মিটার। কিন্তু ওই দিনমজুরের নামে ছয় মাসের বকেয়া বিল দেখিয়ে তা পরিশোধের নোটিশ দিয়েছে কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভূরুঙ্গামারী জোনাল অফিস। অতিসত্ত্বর বিল পরিশোধ না করলে ওই দিনমজুরের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা নোটিশে বলা হয়েছে। পল্লী বিদ্যুতের এমন ভুতুড়ে কাণ্ডে বিপাকে পড়েছেন ভুক্তভোগী ওই দিনমজুরসহ একাধিক ব্যক্তি। জানা গেছে, উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পাইকেরছড়া গ্রামের সিরাজুল হকের ছেলে হবির আলী। তার বাড়িতে কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ বা মিটার না থাকলেও হবির আলীর নামে ৬ মাসের বকেয়া বিল বাবদ ১ হাজার ৯৫১ টাকা দেখিয়ে তা পরিশোধের নোটিশ দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ ভূরুঙ্গামারী জোনাল অফিস। ভুক্তভোগী হবির আলী জানান, আমার নামে কোনো মিটার নেই। তবুও বকেয়া বিল দেখিয়ে তা পরিশোধের নোটিশ দিয়েছে বিদ্যুৎ অফিস। আমি গরিব মানুষ। বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে বিষয়টি জানিয়েছি। একই এলাকার খোকন মিয়া নামের অপর এক ব্যক্তির নামে কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকলেও গ্রাহকের সংযোগ হিসাব ৯৯৭/১৬৬০ দেখিয়ে ৮ হাজার ৮৪৬ টাকা বকেয়া দেখানো হয়েছে। এ বিষয়ে খোকন জানান, বিল দেখে আমার মাথা ঘুরে গেছে। গ্রাহকদের দেওয়া নোটিশের কপিতে বলা হয়েছে, রেকর্ডপত্র অনুযায়ী ২০২১ সালের ৯ অক্টোবর বকেয়ার কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এমতাবস্থায় নোটিশ প্রাপ্তির পর বকেয়া পরিশোধ ও পুনসংযোগ গ্রহণ করার জন্য বলা হয়। অন্যথায় বকেয়া আদায়ের জন্য সরকারের বিদ্যুৎ আইন ও পিডিআর অ্যাক্ট অনুযায়ী কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ নোটিশে আরো উল্লেখ করা হয়, ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) মামলা করার জন্য এই নোটিশের অনুলিপি দেওয়া হয়েছে। ওই এলাকার আমিনুল ইসলাম, ফযেজ উদ্দিন, শিপন মিয়া, আমিনুর রহমান, রজব আলী ও আজাদুল হকের নামে বকেয়া পরিশোধের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অথচ তাদের নামে কোনো বকেয়া নেই বলে জানান তারা। এ ব্যাপারে নোটিশ বিতরণকারী রায়হান মিয়া বলেন, ‘অফিস থেকে ওই নোটিশগুলো সরবরাহ করে গ্রাহক বরাবর আমি শুধু পৌঁছে দিয়েছি। যাদের নামে সংযোগ ছিল না বলে দাবি করা হয়েছে তাদের অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করে বিষয়টি সমাধান করতে বলেছি।’ কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুতের ভূরুঙ্গামারী জোনাল অফিসের ডিজিএম মিজানুর রহমান বলেন, ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তিরা আমার কাছে এসেছিলেন। আমি বিষয়টি বিলিং সহকারীকে যাচাই করতে বলেছি। নোটিশপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নামে যদি সংযোগ না থেকে থাকে তাহলে এমন নোটিশ জারিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত