যশোরের কেশবপুরে এসএসজি বরনডালি দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার সুপারের দায়িত্বে অবহেলার কারণে প্রতিষ্ঠানের এবতেদায়ী শাখার কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের ৪ শ্রেণিকক্ষে দীর্ঘদিন ধরে কোনো ফ্যান নেই। তীব্র তাপপ্রবাহে টিনের চালার ঘরের সঙ্গে শ্রেণিকক্ষের ভ্যাপসা গরমে শিক্ষার্থীরা প্রায় সময় অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিষয়টি সুপারকে জানালেও তিনি কর্ণপাত না করায় ক্ষুব্ধ হয়ে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ওই মাদ্রাসায় পড়াবেন না বলে গত রোববার ৫ শিক্ষার্থীর বই ফেরত দিয়েছে প্রতিষ্ঠানে। এ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। সরেজমিন জানা গেছে, ১৯৭২ সালে কেশবপুর উপজেলার ত্রিমোহিনী ইউনিয়নের বরনডালি গ্রামে এসএসজি বরনডালি দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসাটি স্থাপিত হয়। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকসহ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্যে বরাদ্দকৃত পাকা ভবনে ফ্যানের ব্যবস্থা থাকলেও প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এবতেদায়ী শাখার ১ম শ্রেণি থেকে ৪র্থ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে কোনো ফ্যানের ব্যবস্থা নেই। টিনের চালার ভবনে তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতর শ্রেণিকক্ষের ভ্যাপসা গরমে প্রায় সময় শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। অভিভাবকরা বিষয়টি নিয়ে সুপারকে জানালেও তিনি কর্ণপাত করেননি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত রোববার ৫ শিক্ষার্থীর অভিভাবক তাদের সন্তানদের মাদ্রাসায় পড়াবেন না বলে তাদের বই প্রতিষ্ঠানে ফেরত দিয়েছে। যার কারণে ওই ৫ শিক্ষার্থীসহ অন্য শিক্ষার্থীরাও গত সোমাবার মাদ্রাসায় অনুপস্থিত ছিল। প্রতিষ্ঠানে অভিভাবক সদস্য আলিবুদ্দীন খান বলেন, টিনের চালার ঘরে ফ্যান না থাকায় তীব্র গরমে তার ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে বায়েজিদ খান প্রায় সময় অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিষয়টি বার বার সুপারকে বললেও তিনি পদক্ষেপ নেননি। যে কারণে গত রোববার তার ছেলের বই প্রতিষ্ঠানে ফেরত দিয়েছি। শুধু তিনি নন, তার গ্রামের সোহাগের ছেলে সোহান হোসেন, যহোরের পুতা ছেলের বইসহ ৫ জন অভিভাবক তাদের বই ফেরত দিয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, সুপারের দায়িত্বে অবহেলার কারণে ১ম শ্রেণি থেকে ৪র্থ শ্রেণি পর্যন্ত মাত্র ১০ থেকে ১২ শিক্ষার্থী রয়েছে। মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক নূরুল ইসলাম বলেন, প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক কর্মচারী এবতেদায়ী শাখায় বার বার ফ্যান লাগানোর কথা বলেছে। এমনকি প্রয়োজনে তাকে শিক্ষকদের সহযোগিতা নেয়ার কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু তিনি তার কোনো কর্ণপাত করেননি। তিনি নিজের ইচ্ছামতোই চলেন। সুপার মাওলানা আব্দুল হান্নান বলেন, মাদ্রাসার ফান্ডে কোনো অর্থ নেই। যে কারণে ফ্যান লাগানো সম্ভব হয়নি। আজই ফ্যান লাগানো হবে। মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি শেখ জাহিদুল ইসলাম বলেন, অভিভাবকদের মুখে শিক্ষার্থীদের সমস্যার কথা শুনে সুপারকে ফ্যান লাগানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমি নিজেও একটি ফ্যান কিনে দিতে চেয়েছি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. তোরাব আলী বলেন, আমি ঘটনাটি জানি। খুব তাড়াতাড়ি এ সমস্যার সমাধান হবে।