নিজেদের অর্থায়নে দেড় কিমি. রাস্তা বানাচ্ছেন গ্রামবাসী

প্রকাশ : ২৪ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

নিজেদের অর্থায়নে মাঠের মধ্য দিয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়ক তৈরি করছেন কুমিল্লার বরুড়া পৌরসভা ও উপজেলার ১০ গ্রামের বাসিন্দারা। উপজেলার খোশবাস দক্ষিণ ইউনিয়নের জয়নগর থেকে বরুড়া পৌরসভার দেওড়া পর্যন্ত এ রাস্তা নির্মাণকাজ করছেন তারা। শিক্ষা-চিকিৎসা-ব্যবসাসহ নানা সুবিধার কথা চিন্তা করে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গত ১৩ মে থেকে প্রতিদিন কোদাল-ঝুড়ি নিয়ে রাস্তা তৈরির কাজে চলে আসেন ৫০ থেকে ৬০ জন মানুষ। উৎসবমুখর পরিবেশে সবাই একসঙ্গে কাজ করেন। স্থানীয়রা জানান, খোশবাস দক্ষিণ ইউনিয়নের জয়নগর এবং আশপাশের ১০টি গ্রামের মানুষকে বরুড়া পৌর সদরে যেতে অনেকটা পথ ঘুরে যেতে হয়। অথচ দেড় কিলোমিটার রাস্তা হলেই মানুষের ভোগান্তি কমে আসে। এ ছাড়া বিশাল ওই ফসলের মাঠে জমিতে চাষের জন্য ট্রাক্টর যেতে পারে না। ফসল তুলে বাড়িতে নেওয়ার জন্য কোনো গাড়িও নামার সুব্যবস্থা নেই। এ জমিগুলোতে পানির সেচ নিয়েও কৃষকদের ভোগান্তি বেশ। ফলে মেয়র-চেয়ারম্যানদের দিকে না তাকিয়ে নিজেরাই সে রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নেন। তাদের সঙ্গে একাত্মতা করে অন্তত ১০টি গ্রাম থেকে ৬০ জন মাটি কেটে রাস্তা তৈরিতে যোগ দেন। রাস্তাটি তৈরিতে আশপাশের কয়েকটি গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ বিভিন্ন পরিমাণে জমি দান করেছেন। রাস্তাটি তৈরির অন্যতম উদ্যোক্তা পৌরসভার দেওড়া গ্রামের বাসিন্দা মোশারফ হোসেন বলেন, আমাদের এ কাজটি সমাপ্ত হতে কতদিন লাগবে জানা নেই। প্রতিদিন প্রায় ৫০-৬০ জন কাজ করছেন। সবাই বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করে যাচ্ছেন। রাস্তাটি নির্মাণ হলে পৌরসভার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন দক্ষিণ খোশবাসের যাতায়াতের সুবিধাভোগ করবে প্রায় ১০ গ্রামের মানুষ। পৌরসভার বাসিন্দা দিদারুল আলম বলেন, বরুড়া পৌরসভার দেওড়া থেকে জয়নগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনেক ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে যায়। এতদিন অনেকটা পথ ঘুরে তারা স্কুলে যেত। এখন এ রাস্তাটি সম্পূর্ণ কাজ শেষ হলে ছাত্রছাত্রীরা কম সময়ে এবং অল্প পথ হেঁটেই স্কুলে যেতে পারবে। খোশবাস দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রব বলেন, আমি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত আছি। নির্বাচনের পর আমি এই বিষয়ে আপনার সঙ্গে কথা বলতে পারব। বরুড়া পৌরসভার মেয়র বকতার হোসেন বলেন, তাদের এ মহৎ কাজ দেখে আমি আবেগাপ্লুত হয়ে গেছি। এখনো অনেক ভালো মানুষ সমাজে আছে। তারা আমাকে প্রথম থেকে বিষয়টা অবগত করেনি। তারপরও আমি জানতে পেরে রাস্তার কাজ দেখতে গেছি। শ্রমিকের চায়ের বিলটাও তারা নিজেরাই দিচ্ছে। আমি এ কাজের জন্য কিছু টাকা দেব। পরে পৌরসভার বরাদ্দ আসলে রাস্তায় ইটের সলিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।