‘মানুষের করণ সে কি সাধারণ, জানে কেবল রসিক যারা’ লালনের এ বাণীকে সামনে রেখে শেরপুরে উদযাপন করা হচ্ছে ৯ দিনব্যাপী বাউলসংগীত উৎসব। ফকির লালন সাঁইজির ২৫০ বছর আবির্ভাববর্ষ উপলক্ষ্যে ভারতীয় দূতাবাসের সহযোগিতায় বিশ্ব লালন সংঘ এ আয়োজন করেছে। শেরপুরে এই আয়োজন শুরু হয়েছিল ২০ মে, শেষ হয়েছে গতকাল ২২ মে। তিন দিনব্যাপী এই উৎসবে ভারতের পশ্চিমবাংলার বিভিন্ন জেলা এবং বাংলাদেশের বাউল শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন। এতে ভারতের পশ্চিমবাংলার বিভিন্ন জেলার এবং শেরপুর জেলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার লালনসংগীত শিল্পী এবং ভক্ত কুলেরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বাউল শিল্পীরা লালনের নানা দর্শন চিত্র তুলে ধরে সংগীত পরিবেশন করেন। এছাড়া জেলার বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা সংগীতের ফাঁকে ফাঁকে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। এ সময় ভারত এবং বাংলাদেশ থেকে আগত বাউল শিল্পীরা জানায়, লালন ছিলেন সর্ব দর্শনের দর্শন। আর ভাবধারা ও দর্শন সারা বিশ্বের ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই এই আয়োজন। বাংলাদেশ ও ভারতের আয়োজকরা মনে করেন লালনের দর্শন এর পাশাপাশি তার গান সারা বিশ্বজুড়ে প্রচারের উদ্দেশ্যে এর আয়োজন এবং এ উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের তিন জেলায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে লালনসংগীত উৎসব। গত ১৭ থেকে ১৯ মে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকায় এবং দ্বিতীয় দফায় ২০ থেকে ২২ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হলো শেরপুর জেলায়। এরপর গোপালগঞ্জে অনুষ্ঠিত হবে এই লালনসংগীত উৎসব। ভারতের পশ্চিমবাংলা থেকে নিমাই খেপা, প্রমিলা বিশ্বাস ও শ্যাম সুন্দর দাস বাউল লালনসংগীত পরিবেশন করেন। এছাড়া শেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে লালনসংগীত শিল্পীরা এই উৎসবে সংগীত পরিবেশন করেন। সন্ত্রাসমুক্ত, জঙ্গিবাদমুক্ত ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে লালনের দর্শন ও ভাবধারার বিকল্প নেই বলে জানায় লালন গবেষক ও বিশ্ব লালন সংঘের প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল মান্নান। এছাড়া তিনি লালন এর জন্মজয়ন্তী ও প্রয়াণ দিবসসহ নানা কার্যক্রম রাষ্ট্রীয়ভাবে চালু করা দাবি জানান সরকারের কাছে।