সাতক্ষীরায় বাঁধ ঠেকাতে স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রম
প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সাতক্ষীরার সুন্দরবনসংলগ্ন উপকূলীয় নদ-নদীর পানি অন্তত তিন-চার ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। উপকূল রক্ষা বাঁধের ভাঙন ঠেকাতে উপকূলের বাসিন্দারা গত রোববার সারা দিন বাঁশ ও বস্তা দিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করেছেন। তবে দিনভর কাজ করেও বেড়িবাঁধ ঠেকানো নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয়রা। উপকূলের ভঙ্গুর বেড়িবাঁধে বড় আকারের ঢেউ আছড়ে পড়ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ঘূর্ণিঝড় রিমাল রোববার সন্ধ্যা বা মধ্যরাত নাগাদ মোংলার কাছ দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়ার উপকূল অতিক্রম করবে। এ সময় স্বাভাবিকের চেয়ে ৮-১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। এলাকা পেরিয়ে যেতে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার মতো সময় লাগতে পারে। গাবুরা ইউনিয়নের হুদা মালী বলেন, চরম আতঙ্কের মধ্যে আছি। সত্যি সত্যি যদি ঘূর্ণিঝড়ের কারণে নদীতে ৮-১০ ফুট পানি বাড়ে, তবে পুরো এলাকা লবণপানিতে ভেসে যাবে। তলিয়ে যাবে মাছের ঘের। গাবুরার মানুষ ঝড় নিয়ে খুব বেশি ভয় পায় না, ভয় পায় বাঁধ নিয়ে। বোরবার মধ্যরাতে নদীতে জোয়ার হবে। তখন পানি বেড়ে বাঁধ ভেঙে যেতে পারে। শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের মালেক গোলাম হোসেন জানান, সারাদিন বাঁশ ও বস্তা দিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে এলাকার মানুষ বেড়িবাঁধ রক্ষায় কাজ করছে। বহু মানুষ উৎকণ্ঠা নিয়ে বেড়িবাঁধের রাস্তায় ওপর দাঁড়িয়ে আছেন। তাদের আশঙ্কা, ঘূর্ণিঝড় রিমাল আঘাত হানলে গ্রামের সামনের ছোট্ট নিচু বেড়িবাঁধটি উপচে কিংবা ভেঙে লোনাপানিতে পুরো এলাকা ভেসে যাবে। বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দুর্গবাটি গ্রামের বাসিন্দা গোলাম হোসেন জানান, গ্রামের ৫০ জনের বেশি মানুষ বাঁধ রক্ষার কাজ করছে। ঢেউ ও স্রোতের তীব্রতা থেকে উপকূল রক্ষা বাঁধের ক্ষতি এড়াতে এলাকার মানুষ বাঁধের বাইরের অংশে জিও শিট (জিও ব্যাগের কাপড়) লাগানো হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইমরান সরদার বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাঁধ রক্ষায় তারা মাটি ফেলাসহ জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের কাজ শেষ করেছেন। স্বাভাবিকের তুলনায় ৭-৮ ফুট পর্যন্ত জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলেও ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। শ্যামনগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজিবুল আলম বলেন, গত শনিবার রাত থেকেই মাইকিং করে স্থানীয়দের নিরাপদে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।