ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

যমুনায় অসময়ের ভাঙন নদীগর্ভে অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি

যমুনায় অসময়ের ভাঙন নদীগর্ভে অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি

যমুনা নদীতে অসময়ের ভাঙনে পাবনার বেড়া উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম। এতে হুমকিতে পড়েছে এখানকার কমিউনিটি ক্লিনিকসহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কবরস্থান ও মসজিদ। ভাঙন প্রতিরোধ করতে দ্রুত জিওব্যাগ ফেলার দাবি জানিয়েছে গ্রামবাসী। এরইমধ্যে ১৫ দিনে লেওলাইপাড়া গ্রামের প্রায় অর্ধশত বিঘা ফসলী জমি ও চড়সাড়াসি গ্রামে ১৫-২০টি বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বসবাসের শেষ সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে অনেকেই। উপজেলার হাটুরিয়া-নাকালিয়া ইউনিয়নের চর নাগদাহ, হাটাইল আরালিয়া চরসাড়াসি গ্রামসহ নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়নের লেওলাই পাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। চরসাড়াসি ও চরনাগদাহ গ্রামের ভাঙনকবলিত অসহায় মানুষগুলো অন্যথায় চলে যাচ্ছেন। সরেজমিন দেখা গেছে, নতুন ভারেঙ্গার লেওলাইপাড়া গ্রামের নদীপাড়ের ফসলি জমি ভেঙে বিলীন হচ্ছে নদীতে। আর সে দৃশ্য দেখে বাসিন্দাদের চোখে চিন্তার ছাপ। স্থানীয়দের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা শুধু খোঁজখবর নেয় কিন্তু কোনো কাজ শুরু করেনি। স্থানীয়দের দাবি, এবার ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে এখানকার বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপনা, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ফলে গ্রামবাসীর দিন কাটছে আতঙ্ক-উৎকণ্ঠায়। তাই ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা। চরনাগদাহ গ্রামের কৃষক শফিক উদ্দিন বলেন, নদীভাঙনে আমি পাঁচবার বসতভিটাসহ প্রায় ১০ বিঘা জমি হারিয়েছি। সপ্তাহ খানেক আগে আবারও বসতভিটা হারিয়েছি। আমাদের গ্রামের একটি পাড়া নদীতে চলে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ভাঙন আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। হাটাইল চরের কৃষক মোমিন মোল্লা বলেন, প্রতিবছরই বর্ষাকালে চরের মানুষ নদীভাঙনে বাড়িঘড় জমি হারায়। এবার আবার এই অসময়ে নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে। কয়দিন আগে আমার দুই বিঘা বোরো ধান ও এক বিঘা তিল খেত নদী গিলে খেয়েছে। সব মিলিয়ে আমি প্রায় ১০ বার এ নদীভাঙনের শিকার হয়েছি। আমাকে সর্বস্বান্ত করে দিয়েছে এই নদী। বর্ষার পর নতুন বাড়ি করেছি, এক সপ্তাহ এই ভাঙন থাকলে এটাও হয়তো নদীতে ডুবে যাবে। নতুন ভারেঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আবু দাউদ জানান, গত দুই সপ্তাহ ধরে আমার ইউনিয়নের লেওলাইপাড়া গ্রামে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। গেল এই কয়দিনেই প্রায় অর্ধশতাধিক ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন রোধে দ্রুত জিওব্যাগ না ফেললে ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতম কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে তিনি জানান। বেড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোরশেদুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই। আমি খোঁজখবর নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করব। পানি উন্নয়ন বোর্ড পাবনার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার বলেন, বেড়ার যমুনা নদীর ভাঙনকবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছি। আমরাও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত