নওগাঁর মান্দায় নিয়মবহির্ভূতভাবে রেজুলেশন ছাড়াই ‘উপজেলার ২৫ নং মান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’ এর টিন বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গত রোববার মান্দা সদর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য জিন্নাতুন নেছা অভিযুক্ত দুই শিক্ষকসহ দপ্তরির বিরুদ্ধে উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্তরা হলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরুচী রানী হাওলাদার, সহকারী শিক্ষক খায়রুল আলম ও দপ্তরি সাইফুল ইসলাম।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কয়েক মাস আগে উপজেলার ২৫নং মান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের সময় পুরাতন ভবনটি ভেঙে ফেলার কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের সুবিধার জন্য ঢেউটিন দিয়ে তিনটি কক্ষ তৈরি করা হয়েছিল। নতুন ভবনের কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় টিনের তৈরি তিনটি কক্ষ পরিত্যাক্ত হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক পরিত্যক্ত শ্রেণি কক্ষের টিনগুলো গোপনে বিক্রি করে দেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে প্রধান শিক্ষিকা নিজেকে বাঁচাতে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দেখানোর জন্য রাতারাতি কিছু পুরাতন টিন ক্রয় করেছেন। এ বিষয়ে অভিযোগকারী সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য জিন্নাতুন নেছা বলেন- নতুন ভবন নির্মাণের জন্য শ্রেণি কক্ষ সংকট হওয়ায় পুরাতন ঢেউটিনের বেড়া ও ছাউনি দিয়ে তিনটি কক্ষ তৈরি করা হয়। ভবনের কাজ শেষ হলে টিনের তৈরি কক্ষটি ৩/৪ মাস আগে ভেঙে ফেলা হয়। কিন্তু সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে প্রধান শিক্ষকসহ কয়েকজন পুরাতন প্রায় ১৫০ পিস টিন ভাঙারিতে বিক্রি করে দেন। শিক্ষা অফিসারকে না জানিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানের কোনো মালামাল বিক্রি করা নিষেধ থাকার পরও তারা ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য এ কাজ করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি। স্কুলের টিন ক্রেতা ভাঙারি ব্যবসায়ী মামুন বলেন, সহকারী শিক্ষক খায়রুল আলমের কাছ থেকে সাড়ে ৩ মণ টিন ৮ হাজার টাকায় ক্রয় করেছিলাম। এরপর হঠাৎ করে আমাকে পুরাতন টিন কেনার জন্য খায়রুল মাস্টার ২৫০০ টাকা দেন। আমি পুরাতন টিন না পেয়ে তাকে টাকা ফেরত দিয়েছি। তাদের জন্য আমি মিথ্যা বলে ঝামেলায় জড়াতে চাই না। এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক সুরুচী রানী হাওলাদার বলেন, নিয়ম মেনে টিন বিক্রি করা হয়েছে। বিক্রিত টিনের টাকা সভাপতির কাছে জমা রাখা হয়েছে। টিন বিক্রির বিষয়টি স্কুলের সভাপতি শামীম হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৭ থেকে ৮ হাজার টাকার টিন বিক্রি করে সেই টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কেউ এবিষয়ে কিছু জানেন কি না, এমন প্রশ্ন তিনি এড়িয়ে যান। এ ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা অ্যাডওয়ার্ড সরেন বলেন, টিনগুলো গুছিয়ে রাখতে বলা হয়েছিল। টিন বিক্রিয় করে থাকলে তিনি অপরাধ করেছেন। টিন বিক্রির বিষয়ে আমি অবগত নয়। মান্দা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাশার শামসুজ্জামান বলেন, টিন বিক্রির একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।