তিতাসে বলগেটের ধাক্কায় ভাঙল গোমতী নদীর সেতু
লক্ষাধিক মানুষের চলাচলে ব্যাঘাত
প্রকাশ : ৩১ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
মো. তাজুল ইসলাম, তিতাস (কুমিল্লা)
কুমিল্লার তিতাসে গোমতী নদীতে বালুবাহী বলগেটের প্রতিযোগিতায় আসমানিয়া বাজার সংলগ্ন গোমতী নদীর উপর নির্মিত অস্থায়ী সেতুটি ভেঙে নদীতে পড়ে গেছে। গত বুধবার বিকালে সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর দুইপাড়ের প্রায় ২০টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দির রায়পুর বাস স্টেশন থেকে তিতাসের বাতাকান্দি বাজার পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজ চলছে। ওই সড়কের আসমানিয়া বাজার সংলগ্ন গোমতী নদীর উপর একটি সেতুও নির্মাণ করা হচ্ছে। আগের বেইলি সেতুটি ্এরইমধ্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং ওই স্থানে নতুন সেতুর কাজ চলছে। গোমতী নদীর পূর্বপাশে উপজেলার বৃহত্তর আসমানিয়া বাজার অবস্থিত। প্রতিদিন পশ্চিম পাড়ের প্রায় ১৩টি গ্রামের লোকজন ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজে বাজারে যাতায়াত করতে হচ্ছে। অপরদিকে পূর্বপাড়ের প্রায় ৭টি গ্রামের লোকজন উপজেলা সদরের আসা-যাওয়ার জন্য সেতুটি ব্যবহার করে থাকে। বর্তমানে নির্মাণাধীন সেতুর পাশে বেইলি ব্রিজের একাংশ সংযোগ করে একটি অস্থায়ী কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল। গত বুধবার বিকালে ওই সেতুটি ভেঙ্গে নদীতে পড়ে যায়। উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, দাউদকান্দির রায়পুর থেকে তিতাসের বাতাকান্দি বাজার পর্যন্ত সড়কের মধ্যে আসমানিয়া বাজার সংলগ্ন গোমতী নদীর উপর ১০ কোটি ৭৭ লাখ ২৪ হজাার ৬৯৯ টাকা ব্যয়ে ৭৫ মিটার সেতুর নির্মাণকাজ চলছে। গত বছরের ৮ আগস্ট ওই কাজ শুরু হয়েছে, যার মেয়াদ আছে ২০২৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এসএবিএনএমই ঠিকাদান প্রতিষ্ঠান কাজটি বাস্তবায়ন করছে। ওই সেতুর পাশে ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮০ মিটারের একটি অস্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়, যা ভেঙে গেছে। উপজেলা প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলাম জানান, মে মাস পর্যন্ত নির্মাণাধীন সেতুর ২৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। পাশের অস্থায়ী সেতুটি ৮০ মিটার করার কথা থাকলেও তা ১৫৩ মিটার নির্মাণ করা হয়েছিল। পুরাতন বেইলি ব্রিজের মাঝের অংশটি অস্থায়ী সেতুতে ব্যবহার করা হয়েছিল। সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় প্রায় ৩৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ঈদুল আজহার আগ পর্যন্ত অস্থায়ী সেতু নির্মাণ করা সম্ভব নয়। নারান্দিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আরিফুজ্জামান খোকা জানান, একটি খেয়া নৌকার পাশাপাশি আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে একটি ট্রলার দিয়েছি। ট্রলারে মানুষ বিনা পয়সায় যাতায়াত করছে। এতে প্রতিদিন আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ৭ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। যতদিন পর্যন্ত অস্থায়ী সেতু নির্মাণ না হবে, ততদিন পর্যন্ত এ সেবা অব্যাহত থাকবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজমুল হাসান বলেন, বালুবাহী দুটি বলগেটের প্রতিযোগিতার কারণে অস্থায়ী সেতুটি ভেঙে গেছে। বলগেট দুটি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় রাখা হয়েছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় আসমানিয়া বাজারে উপজেলা প্রকৌশলী ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে বলগেটের মালিকরা বৈঠক করেছে। তারা ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয়েছে। শিগগিরই সেখানে অস্থায়ী সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে।