জোয়ারের লবণ পানিতে ভেসে উঠছে মরা মাছ

প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের নামার বাজার এলাকার বাসিন্দা আবদুল মান্নান। গতকাল তিনি জানান, ‘বুক সমান পানিতে আমার সবগুলো পুকুর তলিয়ে গেছে। অনেক মাছ মজুদ রাখছিলাম সামনে বিক্রি করার জন্য কিন্তু সব শেষ হয়ে গেছে। কিছু মাছ ছিল জোয়ারের লবণ পানিতে সেগুলোও মরে ভেসে উঠতেছে। প্রতিদিন মরা মাছ তুলছি। আমার মতো ক্ষতি আর কারো হয় নাই। আমি ঘূর্ণিঝড় রিমালে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।’ জানা গেছে, আবদুল মান্নান ২০টি পুকুরে মাছ চাষ করেন। তার ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুনসহ প্রায় শতাধিক মানুষ আছেন যারা পুকুরে মাছ চাষ করে থাকেন। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে নিঝুমদ্বীপের চারপাশে মেঘনা নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১০ ফুট পানি বৃদ্ধি পায়। এতে চারবার পুরো নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. আকবর হোসেন বলেন, প্রায় তিন লাখ টাকার মাছ ছিল আমার পুকুরে। আমি ভাবিনি এই পুকুর ডুবে যাবে। আমি পাড়ে জাল দিয়েছিলাম তারপরও জোয়ারে আমার সব মাছ ভেসে চলে গেছে। এখন পুকুরের অবশিষ্ট মাছ প্রতিদিন মরে ভেসে উঠতেছে। এই ঘূর্ণিঝড় রিমাল আমাকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমার দুইটা পুকুর ছিল। একটা ৬০ শতাংশ, আরেকটা ১২০ শতাংশ। জোয়ারে পুরো পুকুর-রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় সব মাছ ভেসে গেছে। এখন লোনা পানিতে মাছ মরে ভেসে উঠছে। সব কিছু হারিয়ে অসহায় হয়ে গেছি। আবদুল মান্নান বলেন, আমার কাছে সরকারি কিল্লার পুকুরসহ ১২টি পুকুর আছে। আমি সামনে কোরবানির সময় মাছ বিক্রির আসায় পুকুরগুলোতে মাছ মজুত করেছিলাম। আগমনী, ধানসিঁড়ি ও ছায়াবীথি কিল্লার পুকুরের পানি কমিয়ে রেখেছিলাম মাছ ধরবো বলে। জোয়ারে প্রায় ২০ লাখ টাকার মাছ নিমিষেই শেষ। পুরো নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। হাতিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফাহাদ হাসান বলেন, নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নসহ পুরো হাতিয়ায় ১ হাজার ২০০টির বেশি পুকুর জোয়ারে ডুবে গেছে। এছাড়া ২৩টি ট্রলার ডুবেছে এবং ১৫৯টি ট্রলার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সরকার কোনো সহায়তা দিলে আমরা তালিকা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌঁছে দেব।