এ বছর পঞ্চগড়ে বেড়েছে লাল সোনাখ্যাত মসলা জাতীয় ফসল মরিচের চাষ। তবে আবাদ বাড়লেও এবার ফলন হয়েছে কম। জেলার মাটি মরিচ আবাদের জন্য উপযোগী হওয়ায় মূলত এখানে ৭ জাতের মরিচ চাষ হয়ে থাকে। সব থেকে বেশি চাষ হয় হটমাস্টার, বালু ঝড়ি ও বিন্দু জাতের মরিচ। সরেজমিন জেলার আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর এলাকায় দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে লাল সোনা। আবাদি জমি থেকে তা তুলে মাঠে শুকাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।
স্থানীয় চাষিরা বলছেন, চলতি মৌসুমে তাপপ্রবাহ আর অনাবৃষ্টির কারণে ফলন কম দেখা দিয়েছে। এদিকে শুকনো মরিচ বাজারে তুললেও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দাম নিয়ে সিন্ডিকেট করার অভিযোগ রয়েছে চাষিদের। জানা গেছে, জেলার (পঞ্চগড় সদর, তেঁতুলিয়া, আটোয়ারী, বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলা) মাটি আবাদের উপযোগী হওয়ায় সাত জাতের মরিচ চাষ হয় এখানে।
সব থেকে বেশি চাষ হয় হট মাস্টার, বালু ঝড়ি ও বিন্দু জাতের মরিচ। তবে আবাদ বাড়লেও গ্রীষ্মের খরতাপ ও অনাবৃষ্টির কারণে ফলন কম হয়েছে। মির্জাপুর এলাকার মরিচ চাষি আমিরুল ইসলাম বলেন, গত বছর এক বিঘা জমিতে মরিচ আবাদ করি। কিছুটা লাভ হওয়ায় এবার আবাদ বাড়িয়েছি। কিন্তু অনাবৃষ্টি আর তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে এবার ফলন অনেক কম হয়েছে। একই কথা বলেন মরিচ চাষি তারিকুল ইসলাম। তিনি জানান, একদিকে মরিচের ফলন কম হয়েছে; অন্যদিকে শুকিয়ে বাজারে তোলার পর গত বছরের চেয়ে অনেক কম দাম পাচ্ছি। এতে করে আমাদের খরচ না ওঠায় লোকসান হচ্ছে। এদিকে, গত বছর মণপ্রতি ১২ হাজার টাকায় মরিচ বিক্রি হলেও চলতি মৌসুমে তা ৪ হাজার টাকা কমে ৮ হাজার টাকায় নেমে এসেছে বলে অভিযোগ চাষিদের। তারা জানান, আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এবং বাজারে তোলার পর দাম নিয়ে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের শিকার হতে হচ্ছে। আটোয়ারী বাজারে আবু বক্কর নামে শুকনো মরিচ বিক্রি করতে আসা এক চাষি বলেন, প্রচুর পরিমাণে শুকনো মরিচের চাহিদা রয়েছে। এর মাঝে আমরা বাজারে শুকনো মরিচ এনে বিপাকে পড়েছি। ব্যবসায়ীরা দাম অনেক কম দিচ্ছে। তবে ভিন্ন কথা মরিচ ব্যবসায়ীদের। তারা বলছেন, মোকামে চাহিদা কম থাকায় দাম কম যাচ্ছে। একই সঙ্গে মরিচের মান ও ওজনে কম হওয়ায় দাম কিছুটা কমেছে। তবে বাজার ভালো যাচ্ছে। পঞ্চগড় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্যান) সুবোধ চন্দ্র রায় বলেন, আবাদ বাড়লেও আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় ফলন কিছুটা কম হয়েছে। তবে মরিচ বিক্রিসহ চাষিদের ভালো ফলন উৎপাদনে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।