ফেনীর শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কে ওয়ান স্টোপস মেটারনিটি ক্লিনিক নামে একটি প্রাইভেট হাসপাতালের বিরুদ্ধে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় মো. নিশান নামের এক মাদ্রাসার শিশুছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার বিকাল ৫টার দিকে গলায় টনসিলের অপারেশনের জন্য ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় শিশুটিকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। শিশু নিশান নোয়াখালীর সেনবাগ থানা এলাকার দক্ষিণ মোহাম্মদপুর গ্রামের দুবাই প্রবাসী শহিদ উল্লাহর ছেলে। ছেলের অসুস্থতার খরব শুনে কিছুদিন পূর্বে দুবাই থেকে বাংলাদেশে আসেন নিহত শিশুর বাবা শহিদ উল্লাহ। মৃত নিশানের পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত সোমবার ৫টার দিকে শিশু নিশানের গলার বামপাশে টনসিল অপারেশনের জন্য নিশানকে ভর্তি করানো হয় ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কে অবস্থিত ওয়ান স্টোপস মেটারনিটি নামের ক্লিনিকটিতে। রাত আনুমানিক ১১টার দিকে হাসপাতালে শিশুটির অপারেশন সম্পন্ন করেন ওই হাসপাতালের সার্জারি ডাক্তার সার্জন কিশোর কুমার হাওলাদার। অপারেশনের পূর্বে শিশু নিশানের শরীরে চেতনা নাশক ইনজেকশন (এনেস্থেসিয়া) প্রয়োগ করেন হাসপাতালের মালিক ডাক্তার নাজমুল হক ভূঁইয়া। অপারেশন সম্পন্ন হবার পর শিশুটির জ্ঞান না ফেরায় উদ্বেগ প্রকাশ করে শিশু নিশানের পরিবার। এক সময় রাত ৩টার দিকে শিশু নিশানের অবস্থার অবনতি দেখে হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ছোটাছুটি করতে থাকে। রাত আনুমানিক ৪টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটির পরিবারকে জানায়, উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশু নিশানকে ঢাকা অথবা কুমিল্লা নিয়ে যেতে হবে। পরে শিশুটির পরিবার শিশু নিশানকে কুমিল্লার মর্ডান হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। নিশানের পরিবারের দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং ডাক্তারের অবহেলায় মৃত্যু হয়েছে নিশানের। এ ঘটনায় তারা প্রশাসনের কাছে কঠিন বিচারের দাবি জানায়। ঘটনা সম্পর্কে জানতে হাসপাতালের অভিযুক্ত সার্জারি চিকিৎসক নোয়াখালী আবদুল মালেক মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক কিশোর কুমার হাওলাদারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তার চিকিৎসায় কোনো ত্রুটি ছিল না। অপারেশনের পর শিশুটির জ্ঞান ফেরেনি। যে ডাক্তার এনেস্থেসিয়া দিয়েছেন ওনার ত্রুটি থাকতে পারে। এদিকে শিশুটির শরীরে এনেস্থেসিয়া প্রয়োগকারী চিকিৎসক এবং ওই হাসপাতালের মালিক ডাক্তার নাজমুল হক ভূঁইয়া বলেন, তিনি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ হলেও এনেস্থেসিয়ায় তার অভিজ্ঞতা রয়েছে। এতে তার কোনো ভুল হয়নি। ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করেন। তারা অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।