সিংগাইরে হাতুড়ে ডাক্তারের চিকিৎসায় নারীর মৃত্যু
প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জে হাতুড়ে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় রোজিনা আক্তার নামে এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় প্রভাবশালীরা টাকার বিনিময়ে লাশটি ময়না তদন্ত ছাড়াই দাফন করেছে বলেও জানা গেছে। গত শনিবার সিংগাইর উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তার নরেন্দ্র চন্দ্র মালোর বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই নারীর মৃত্যু হয়।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার বিকালে চান্দহর ইউনিয়নের চক চালিতাপাড়া গ্রামের খবির হোসেনের স্ত্রী রোজিনা আক্তারের পেটে ব্যথা শুরু হয়। পরে স্বজনরা তাকে পাশের ফতেপুর গ্রামের নরেন্দ্র চন্দ্র মালোর বাড়িতে নিয়ে যায়। বাড়ির মধ্যে জরাজীর্ণ নাম পরিচয়হীন একটি ফার্মেসিতে তাকে চিকিৎসা দেন নরেন্দ্র। বিকাল থেকে রোগী রোজিনাকে ইনজেকশন ও স্যালাইন পুশ করে চিকিৎসা দেন তিনি। রাত ২টায় ওই নারীর মৃত্যু হয়। রোজিনা আক্তারের স্বামী খবির হোসেন বলেন, সন্ধ্যা থেকে রাত দুইটা পর্যন্ত আমার স্ত্রীকে বিভিন্ন ইনজেকশন ও স্যালাইন পুশ করেন ডাক্তার নরেন্দ্র। রাত ১১টার দিকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতে চাইলে ডাক্তার নরেন্দ্র নিষেধ করেন। ডাক্তার নরেন্দ্র আমাকে বলেন- তোমরা কি আমার চেয়ে বেশি বুঝো নাকি। আর একটা স্যালাইন পুশ করলেই তিনি সুস্থ হয়ে যাবে। রাত দুইটার পরে একটা ইনজেকশন পুশ করার সঙ্গে সঙ্গে আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়। খবির হোসেন আরো বলেন, গত রোববার সকালে স্থানীয় তিন ইউপি সদস্য দ্বীন ইসলাম, কলিমুদ্দিন ও সালাউদ্দিন এবং স্থানীয় এনাম, দেলোয়ার হোসেনসহ স্থানীয়রা বিষয়টি সমাধান করে দেন। এ নিয়ে আর বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করে এবং জোর করে সাদা কাগজে আমার স্বাক্ষর রাখে। স্থানীয় ইউপি সদস্য দ্বীন ইসলাম বলেন, সকলের সম্মতি নিয়ে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। কাউকে জোর করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়নি।
যেহেতু বিষয়টি সমাধান হয়েছে তাই ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করা হয়। এ বিষয়ে কথা বলতে ডাক্তার নরেন্দ্র চন্দ্র মালোর বাড়িতে গেলে তিনি সাংবাদিক দেখে দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সিঙ্গাইর থানার অফিসার ইনচার্জ জিয়ারুল ইসলাম বলেন, ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর খবর আমরা পাইনি। তবে ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।