ঢাকা ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, জেলা সিভিল সার্জনসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বরাবর অভিযোগ করেছেন। আর এই অভিযোগ করেছেন তার অধীনস্থ কাউখালী উপজেলার ১৭ জন সিএইচসিপি নিজেরাই স্বাক্ষর করে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অভিযোগকারীরা সিএইচসিপি পদে চাকরির শুরু থেকে প্রায় ১৩ বছর ধরে একই বেতনে কর্মরত আছেন। অথচ কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুজন সাহা এই উপজেলায় যোগদানের পর থেকে নানা কৌশলে ও অজুহাতে এদের কাছ থেকে তাদের বেতনের টাকার একটি অংশ তাকে দিতে বাধ্য করেন। যার ফলে সামান্য বেতনের টাকার একটি অংশ চলে যাওয়ায় তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয় বলে তারা জানান। প্রতিবছর প্রত্যেকটি কমিউনিটি ক্লিনিকে পরিবহন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের জন্য ১১ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। তিনি ক্লিনিক প্রতি ২-৩ হাজার টাকা দিয়ে বাকি টাকা আত্মসাৎ করেন। যে কারণে গত ২০২৩ অর্থ বছরে সিএইচসিপিগণ বিল তুলতে অস্বীকৃতি জানালে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিল তোলার নোটিশ প্রদান করেন এবং বিল তুলতে বাধ্য করেন। এমনকি তাদের সই স্বাক্ষর নিয়ে পূর্বের ন্যায় ২-৩ হাজার টাকা করে সকলকে বুঝিয়ে দেন। বিভিন্ন সময় সামান্য কোনো ত্রুটি পেলেই কৈফিয়ত তলবের নামে ৫-১০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি সিএইচসিপি বিথীকা সিকদার মাতৃত্ত্বকালীন ছুটি শেষে অফিসে যোগদান করতে গেলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা না থাকার অজুহাতে ২ দিন পরে আসার পরামর্শ দেন। অথচ ২ দিন পরে যোগদান করার জন্য গেলে ২ দিনের বিলম্ব দেখিয়ে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন এবং ৮ হাজার টাকা দিলে যোগদান করার অনুমতি পান। সিএইচসিপি মো: মোস্তাফা তালুকদার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রচার করলে রাজনৈতিক সম্প্রকতার ভয় দেখিয়ে তাহার ফাইল সিবিএইচসিতে পাঠিয়ে চাকরি খেয়ে ফেলার হুমকি দিয়ে ৫ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন। তিনি রাজনৈতিক দল (আওয়ামী লীগ) করেন বলে তাকে নানাভাবে চাপ দিয়ে বারবার টাকা চাইলে সে টাকা না দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করে নানাভাবে হয়রানি করেন। তার বাবা সাবেক সিভিল সার্জন হওয়ায় স্বাস্থ্য বিভাগের সকল কর্মকর্তা তার আংকেল হন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও কোনো লাভ হবে না বলে সবসময় অধীনস্থদের ভয় দেখান। অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, স্বাস্থ্য বিভাগের সরকারি বিভিন্ন প্রোগ্রামে সরকারি বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও সবসময় স্বাস্থ্য কর্মীদের মোটা অংকের চাঁদা দিতে বাধ্য করেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন প্রশিক্ষণের সময় প্রশিক্ষণার্থীদের অগ্রীম স্বাক্ষর নিয়ে বিল তুলে তাদের না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করেন। এছাড়া তিনি ঢাকায় ট্রেনিং-এর কথা বলে মাসের অধিকাংশ সময় ঢাকায় অবস্থান করায় অধিনস্থদের নানাভাবে হয়রানির স্বীকার হতে হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এর পুরাতন ভবন বিক্রিতেও তিনি অনিয়ম করছেন বলে অভিযোগ করেছেন অভিযোগকারীরা। এছাড়া এর আগে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানোর জন্য সঠিকভাবে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ না দিয়ে সরকারি বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সুজন সাহা মোবাইলে বলেন, ফোনে কথা বলা যাবে না অফিসে এসে দেখা করুন। বিষয়টি নিয়ে পিরোজপুর সিভিল সার্জন ডা. মো: মিজানুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে জানান, তিনি বিষয়টি অবগত রয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত