ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

স্মার্ট ঠাকুরগাঁও গড়তে প্রধান অন্তরায় যোগাযোগব্যবস্থা!

স্মার্ট ঠাকুরগাঁও গড়তে প্রধান অন্তরায় যোগাযোগব্যবস্থা!

দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও। এ জেলা অন্যান্য জেলার তুলনায় অনেক পিছিয়ে। কৃষিনির্ভর অর্থনীতি জেলা হলেও কৃষিপণ্য সরবরাহে প্রধান অন্তরায় যোগাযোগ ব্যবস্থা। জেলায় ১ হাজার ৫৯৫ কিলোমিটার রাস্তাঘাট পাঁকা হলেও এখনো ৩ হাজার ৪১৭ কিলোমিটার রাস্তা কাঁচা রয়ে গেছে। স্মার্ট ঠাকুরগাঁও গড়তে রাস্তা পাকাকরণ ও ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণের বিকল্প নেই। এ দাবি যেন এক গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, দেশের খাদ্য উৎপাদনে ঠাকুরগাঁও জেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এ জেলায় ধান, চাল, গম, ভুট্টা, নানাবিধ সবজি চাষসহ আম, লিচু উৎপাদনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মাতৃগাঁও গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আলিম বলেন, প্রায় ৫০ বছর ধরে নারগুন ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম ও মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। রমজান আলী বলেন- ধান, গম, ভুট্টা এবং বিভিন্ন ধরনের সবজি উৎপাদন করি; কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় সময়মতো উৎপাদিত ফসল বাজারে নিতে পারি না। এতে করে পচনজাতীয় ফসল নষ্ট হয়ে যায়। ফলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর শাহপাড়া গ্রামের মনসুর আলী বলেন, মাদ্রাসাপাড়া হয়ে বাহাদুরপাড়া পর্যন্ত রাস্তাটা চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শহর ঘেঁষা রাস্তাটি হওয়ায় প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। রাস্তাঘাটের উন্নয়ন ছাড়া কীভাবে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া সম্ভব? তিনি রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দৃষ্টি জানান। এমন চিত্র শুধু সদর উপজেলায় নয়, অন্য উপজেলাগুলোতেও একই চিত্র। রাণীশংকৈল, বালিয়াডাঙ্গী, হরিপুর এবং পীরগঞ্জ উপজেলার একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কিছু রাস্তা রয়েছে, যেগুলোতে বর্ষা মৌসুমে চলাচল করা যায় না। মনের ক্ষোভে গ্রামবাসী অনেক সময় রোপা (ধানের চারা) লাগিয়েছেন। কৃষি পণ্য সরবরাহের জন্য রাস্তাগুলো পাকা করা প্রয়োজন।

এখনো হাজার হাজার মানুষ পড়ালেখা থেকে শুরু করে সরকারের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)’র সূত্রে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলায় মোট ৫ হাজার ১২ কিলোমিটার রাস্তা। পাঁকা হয়েছে ১ হাজার ৫৯৫ কিলোমিটার। কাঁচা ৩ হাজার ৪১৭ কিলোমিটার। ব্রিজ-কালভার্টের সংখ্যা ৭ হাজার ৫৪১টি। যার দৈর্ঘ্য ২৬ হাজার ২২৩ মিটার। চলমান ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৭৫ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা পাকা করা হবে এবং প্রায় ১৫টি ব্রিজের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (প্রস্তাবিত প্রকল্প) হতে আরো প্রায় ২০০ কিলোমিটার সড়ক ও প্রায় ৮৫টি ব্রিজের মোট ২ হাজার ৮০৫ মিটার দৈর্ঘ্য ব্রিজের প্রস্তাব উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ভিপিপি) প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানানো হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)’র নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মামুন বিশ্বাস বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে এখনো ৩ হাজার ৪১৭ কিলোমিটার রাস্তা কাঁচা রয়েছে। সড়ক সংযোগের জন্য ২ হাজার ৫০০ মিটার ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ করা প্রয়োজন। আমরা এরইমধ্যে কিছু প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত